কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় রামশীল ইউনিয়নে অস্বাভাবিক দুর্নীতি অনিয়মের মধ্য দিয়ে চলছে কর্মসৃজন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। ভুয়া শ্রমিকের নাম দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মেম্বাররা। এ যেন অপ্রতিরোধ্য দুর্নীতি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) আওতায় ১ম পর্যায় উপজেলার গ্রামীণ সড়ক সংস্কারে রামশীল ইউনিয়নে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মেম্বারদের উপর দায়ীত্ব দেয়া হয় ফলে তারা এক স্থানে প্রকল্প দিয়ে অন্য স্থানে ইচ্ছামত কাজ করাচ্ছেন। প্রতিটি প্রকলেকল্পে যত জন শ্রমিকের নাম দেয়া হয়েছে এর মধ্যে অধিকাংশ শ্রমিকই কখনই আসে না কিন্তু তাদের নাম কিভাবে যেন সরকারি মাস্টার রুলে উঠে যায়। আর যারা আসেন তারাও আবার সকাল ৯ টায় এসে ২ টা ৩০ মিনিটে চলে যান। প্রতিজন শ্রমিকের প্রতিদিন ২শ’ টাকা হাজিরা সপ্তাহে বৃহস্পতি ও শুক্রবার বন্ধ। বাকি ৫ দিন কাজ চলে এভাবে ৪০ দিন চলবে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার চিরঞ্জীবী তার প্রকল্প বলরাম বাড়ৈর বাড়ি হতে নরত্তম বাড়ৈর বাড়ি হয়ে নৈদার চাঁদের বাড়ি হয়ে মঙ্গল মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও সে কাজ করাচ্ছেন ঢুঙ্গী বাড়ি হতে তালুকদার বাড়ি পর্যন্ত। প্রকল্পে ৫৯ জন শ্রমিক থাকলেও যোগদান করে মাত্র ৪৪ জন। বাকি ১৫ জনের হাজিরা অটোমেটিক খাতায় উঠে যায়। এতে জন প্রতি ২শ’ টাকা করে ১৫ জনের নামে প্রতিদিন ৩ হাজার টাকা এভাবে ৪০ দিনে লাখ লাখ টাকা প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন মেম্বাররা। এছাড়াও গত ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে এলজিএসপি প্রকল্পের ১লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে বোকের পাকা ড্রেন নির্মাণ করার কথা থাকলেও মাত্র ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে ১মাস আগে ড্রেনটি নির্মাণ করে বাকি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে। ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার স্বপন হালদারের প্রকল্প খাগবাড়ী বিষ্ণু মন্দির হতে পশ্চিম দিকে হালদার বাড়ি হয়ে রমেন মলিকের বাড়ি পর্যন্ত বাস্তবায়নের কথা থাকলেও সে কাজ করাচ্ছেন হাই স্কুল মাঠে। তার শ্রমিক ৬০ জন যোগদান করে মাত্র ৫০ জন। বাকি ১০ জনের নামে ২৪০ দিনে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া চেষ্টা করছেন। ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুনীল হালদার প্রকল্প জহরের কান্দি রঙ্গলাল বিশ্বাসের বাড়ি হতে কবর বাড়ি জামে মসজিদে মাঠ ভরাট করার কথা থাকলেও সে কাজ করাচ্ছেন রুহিনী বিশ্বাসের বাড়ি হতে হাই স্কুল পর্যন্ত। তার শ্রমিক ৫৫ জন প্রকল্পে গিয়ে পাওয়া যায় মাত্র ৩৫ জন তবে লেবার সরদার সুমন ঢালী জানান, আমারা প্রকল্পের কাজ করি ৪৮ জনে। বাকি ২০ জনের নামে ২শ’ করে প্রতিদিন ৪হাজার টাকা করে একইভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। এ ব্যাপারে প্রকল্পের সিপিসি মেম্বারদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, আপনার কাছে অনিয়ম হয়েছে। আমাদের কাছে ঠিকই আছে, প্রকল্প কর্মকর্তা দেখে গেছেন, এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ আকন জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন