শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

অপরূপ সৌর্ন্দযে ভ্রমণ পিপাষুদের দৃষ্টি কাড়ে

দৃষ্টিনন্দন রামগড় পর্যটন লেক

প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা, রামগড় (খাগড়াছড়ি) থেকে
“দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া” কবিগুরুর কবিতার লাইনটির যথার্থতা প্রমাণ করেছে পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড়ের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়া পর্যটন স্পটগুলো হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণ পিপাষুদের। খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলা সদর হতে ৫০ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রামগড় উপজেলা সদর। এই উপজেলার উপজেলা প্রশাসন কেন্দ্রিক ইংরেজি ডব্লিও বর্ণমালার আকৃতিতে ২৫০ মিটার লম্বা রামগড় পর্যটন লেক। প্রাকৃতিক পরিবেশবান্ধব এই মনোরম লেকে প্রবেশ দ্বারে ১নং গেইটে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বিজড়িত বিজয় ভাস্কর্য্য এবং ডান পাশে রয়েছে ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৬৮ সালে রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পার্বত্যাঞ্চলে সর্বপ্রথম শহীদ মিনারের মূল স্তম্ভ নির্মিত হয়েছিল স্মৃতি বিজড়িত রামগড়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। রামগড় লেকটি অত্যান্ত আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন। চারপাশে রেলিং ঘেরা এবং বাহারি সাজে সজ্জিত। লেকের উভয়পাশে রয়েছে যানবাহন চলাচলের রাস্তা ও মাঝখানে একটি সুদৃশ্য ঝুলন্ত সেতু। লেকের দুই তীরে রয়েছে আগত দর্শকদের বিশ্রামের জন্য ১২টি শেড। লেকের মাঝখানে রয়েছে ঝুলন্ত সেতুটি। কেবল জনসাধারণের চলাচলের জন্য সর্বদা উন্মুক্ত থাকে তবে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। পাশে রয়েছে একটি দ্বিতলা ভবন রয়েছে একটি রেস্টহাউজ। লেকের পাশে উপজেলা প্রশাসন ভবনের পেছনে রয়েছে ১৭৯৫ সালের ২৯ জুন স্বল্প পরিসরে মাত্র ৪৪৮ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন যা কালের বিবর্তনে নাম ও ধাপ অতিক্রম করে বর্তমানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)’র উৎপত্তিস্থল স্মৃতি বিজড়িত স্মৃতিসৌধ। রয়েছে পোড়া মাটির টেরাকোটায় এ বাহিনীর বিভিন্ন বিবর্তনের অবয়ব। যা বিশ্ব দরবারে আজীবন রামগড়ের ইতিহাসকে স্মৃতিময় করে রাখবে। এই স্মৃতি স্তম্ভটি ৬ জুন ২০০৫ সালে স্থাপন করা হয়। এর একটু দূরেই সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর কিনারায় ১৯২০ সালের প্রাচীন মহকুমা শহরের এসডিওর পুরানো ডাক বাংলো। রামগড় সদরে প্রবেশ দ্বারে রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে রয়েছে বিশালকার স্মৃতিস্তম্ভ যা রামগড় সদরে প্রবেশের পূর্বে স্বাধীনতার মোহনায় স্বাগত জানায়। তাছাড়া রামগড় উপজেলায় প্রবেশের পূর্বে সীমান্তবর্তী  বি¯ৃÍর্ণ এলাকাজুড়ে রামগড় চা বাগান যেন প্রকৃতিতে পেখম মেলে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিনই খাগড়াছড়ি-ফেনী সড়কের দু’দ্বারে হাজার হাজার যাত্রী প্রাণ ভরে উড়ে বেড়ান চা সবুজের এই সমারোহে। বাগানের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে বিশালাকার প্রাকৃতিক একটি লেক। শীতকালে এখানে হাজার হাজার অতিথি পাখি মুগ্ধ করে ভ্রমণ পিপাষুদের। রামগড় সরকারি ডিগ্রি কলেজ সম্মুখে রয়েছে পাহাড় অঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (সহেল বাগান), পাইলট বাগান, রামগড় সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে কলসীমুখ নামে আরও একটি দর্শনীয় স্থান। কলসীর আকৃতিতে এঁকেবেঁকে যাওয়া সীমান্তবর্তীর মাঝে দ্বীপভূমি সদৃশ্য একটি পাহাড়ি গ্রাম। যার তিন দিক জুড়েই ভারত যা হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত বিজিবি ক্যাম্প থেকে চমৎকার রূপ ধারণ করে। আরো মুগ্ধ করবে সীমান্তবর্তী ফেনী নদীসহ অসংখ্য স্বচ্ছ মিষ্টি পানির প্রবাহমান খাল-বিল, ছড়া, ফুলে-ফলে ভরা লাউ-কুমড়োর ক্ষেত ভ্রমণ পিপাষুদের পিপাসা মেটাবেই। এখানে রয়েছে উপজাতীয় বৈচিত্রময় জীবন। তাদের সংস্কৃতি, নাগরিক জীবন যে কোনো মানুষের আনন্দকে করবে পরিপূর্ণ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন