আদমদীঘি (বগুড়া ) উপজেলা সংবাদদাতা
বগুড়ার আদমদীঘিতে পাল সম্প্রদায় এখনো মৃৎশিল্পকে ধরে রেখেছে। জ্বালানি সংকট মাটির দামবৃদ্ধি ও বাজারে প্লাস্টিক ও সিলভারের পাত্রের আবির্ভাবের পরও অনেকে ধরে রেখেছে এ ব্যবসা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, ঠাকুরগাঁ, দিনাজপুর, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে বিত্তশালি পরিবারের কাছে মাটির তৈরি এইসব জিনিসের কদর এখনো কমেনি। নিম্ন পরিবারের লোকজন মাটির হাঁড়ি পাতিলে রান্না করে থাকে এখনো। এখানকার এই মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল কলস, ফুলের টপ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও যায় বলে পাল সম্প্রদায়রা জানান। ফলে উপজেলার রামপুরা, তালশন ও তারতা গ্রামের প্রায় ৮ শতাধিক পাল সম্প্রদায়ের মৃৎশিল্পীরা মাটির কলস, পাতিল, দইয়ের হাঁড়ি, কুপিবাতি, মাছধোয়া ও পিঠাবানানোর পাত্র তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। রামপুরা গ্রামের বাসুদেচন্দ্র পাল বলেন আমার পিতা এ শিল্পের কাজ করেছে, আমরাও করে যাচ্ছি অন্য ব্যবসা করতে পারি না। নারায়ণ পাল বলেন আগেরমতো এ ব্যবসায় আর পোষায় না, মাটির দাম বেশি পাওয়াও যায় না, জ্বালানিরও একই অবস্থা, কোন রকমে এ কাজটিকে ধরে রেখেছি বলে কষ্টের মধ্যেও সংসার চলে যাচ্ছে। একই গ্রামের স্বরেন পাল বলেন স্থানীয় হাট-বাজারে আগের মতো আর বেচা-কেনা হয় না। আগে গরমের সময় মাটির কলস, সরই প্রচুর বিক্রি হত, বাড়ির পাশাপাশি অফিস আদালতেও কলসে পানি রেখে ব্যবহার করা হত, এখন বাজারে ফ্রিজ আসার পর কলসের ব্যবহার নেই। বর্তমান আমাদের এব্যবসা টিকে রেখেছে বুড়িমারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, তিস্তা, উলিপুর, গাইবান্ধা, বোনার পাড়া এলাকার মানুষ। মাটির হাঁড়ি বাসন ব্যবহারে অসুখ-বিসুখ কম হয় বলে তারা মাটির হাঁড়িতে ভাত রান্না এবং মাটির থালাতে ভাত খায়। এ কারণে ওইসব এলাকার লোকজন আমাদের নিকট থেকে প্রতিদিন ট্রাক যোগে এসব মালামাল নিয়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন