ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে নিবন্ধিত হয়ে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ দিন চাকরি করেও বেতন ভাতা পাননি ফুলবাড়ী উপজেলার ৫টি কলেজের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক। দীর্ঘদিনেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা যেমন হতাশ হয়ে পড়েছেন তেমনি শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার ৫টি এমপিওভুক্ত কলেজের মধ্যে ডিগ্রী কলেজ ৩টি, স্কুল এন্ড কলেজ ২টি। ৫টি কলেজের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে মোট শিক্ষক সংখ্যা ১৫৯। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত ১১০ জন, নন এমপিওভুক্ত ৪৯ জন। এর মধ্যে ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজে ২১ জন, মহিলা ডিগ্রী কলেজে ১২ জন, রাবাইতারী স্কুল এন্ড কলেজে ০৭ জন, নাওডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজে ০১ জন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী নিয়োগ প্রাপ্ত এসব শিক্ষক দীর্ঘদিন ডিজিতে ধরনা দিয়েও বেতন ভাতার সরকারি অংশ পাননি। অনেকেই আবার নানা রকম শর্তের বেড়াজালে আটকা পড়েছেন। ফুলবাড়ী মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক বিপুল কুমার সরকার ২০০২ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। এ ব্যাপারে বিপুল কুমার সরকার বলেন, একটি শর্ত পূরণ হলে আর একটি শর্ত আরোপ করা হয়। ফলে ১৪ বছরেও এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। রাবাইতারী স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শাহানুর আলম চৌধুরী বলেন, অনেক আশা নিয়ে শিক্ষকতা মহান পেশায় ২০১০ সালে যোগদান করি। কিন্তু দীর্ঘ ০৫ বছর চাকরি করেও বেতন ভাতা পাইনি। ইতিমধ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ হওয়ায় অন্য পেশায় যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই বাধ্য হয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের আশায় কলেজে পড়ে আছি। ১ম ও ২য় শিক্ষকের পদ ছাড়াও ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজ, ফুলবাড়ী মহিলা কলেজ ও কাশিপুর ডিগ্রী কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৮-১০ জন শিক্ষক ১৩-১৪ বছরে বেতন পাননি। এসব শিক্ষকের কলেজ থেকে বেতন ভাতা দেয়ার কথা থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার বেতন ভাতা দেন না। মাঝে মধ্যে কিছু সম্মানী পেলেও তা অতি সামান্য। হতাশাগ্রস্ত এসব শিক্ষকের কেউ অন্য পেশায়, কেউবা কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের আশায় কলেজগুলোতে পড়ে আছেন। পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছন্ন এসব শিক্ষক মানবেতর জীবন-যাপন করলেও দেখার কেউ নেই। ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আজিজার রহমান মাস্টার বলেন, ৩ বছর মেয়াদী ডিগ্রী পাস কোর্সের জন্য ৩য় পদে শিক্ষক অবশ্যই প্রয়োজন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ৩য় শিক্ষক নেয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা আছে। সরকারের ৩য় পদের শিক্ষকদের যত শিঘ্র সম্ভব বেতন ভাতার সরকারি অংশ দেয়া উচিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন