দৈনিক ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৩৮ নং ঘোপখালী (২) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান শিক্ষককে শাস্তিমূলক বদলি এবং টিনশেড ঘর (সাময়িক) নির্মাণ করায় আনন্দের বন্যা বইছে শিশুশিক্ষার্থীদের মধ্যে। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের দুর্নীতি ও অনিয়মে ঠিকমতো ক্লাস হতো না, বসার কোনো বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল ছিল না, শিশুদের মাটিতে বসে ক্লাস করতে হতো, সর্বদা ছাদের প্লাস্টার ভেঙে পড়ার আতঙ্কে ছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে বই-খাতা ভিজে যেত এবং দরজা-জানালা না থাকায় বাতাসে বই-খাতা ওড়ে যেত।
গত ০৩ এপ্রিল দৈনিক ইনকিলাবে ‘মঠবাড়িয়ার ৩৮ নং ঘোপখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়/প্রধান শিক্ষকের অনিয়মে অস্তিত্ব সঙ্কটে স্কুল’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রধান শিক্ষক শফিকুলকে শাস্তিমূলক বদলি করে সহকারী শিক্ষিকা নাজনীন আক্তারকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং ৪০/১৮ ফুট আয়তনের একটি টিনশেড ঘর (সাময়িক) নির্মাণ করা হয়।
গতকাল সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, শিশুশিক্ষার্থীরা নতুন টিনশেড ভবনে ক্লাস করছে। দীর্ঘদিন জীর্ণ ভবনে থেকে হতশায় নিমজ্জিত শিশুরা নতুন ভবন পেয়ে যেন নতুন জীবন পেয়েছে। তাদের চোখে-মুখে আনন্দ ও উল্লাস। জান্নাতি (প্রথম শ্রেণি), খাইরুল ইসলাম (চতুর্থ), রাবেয় (চতুর্থ) ও মীম (পঞ্চম) জানায়, নতুন ঘর পেয়ে তারা আনন্দিত, এখন তাদের বসার বেঞ্চ আছে, শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস করেন সব মিলিয়ে তারা খুশি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন সুলতানা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, দৈনিক ইনকিলাব এবং স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শিশুদের মুখে হাসি ফুটেছে তাতেই আমি খুশি। সকলের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, স্কুলের পাকা ভবনের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। নির্মাণকালীন সময়ের জন্য টিনশেড ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন