মঙ্গলবার , ৬ জুন ২০২৩, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ১৬ যিলক্বদ ১৪৪৪ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কুড়িগ্রামে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী আজও তালিকাভুক্ত হতে পারেননি

প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে

কুড়িগ্রামের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী ম-ল স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও আজও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। তালিকাভুক্ত হতে বার বার ঢাকায় আবেদন-নিবেদন করেও কাজ হয়নি। অদৃশ্য কারণে তা আর হয়ে উঠে না। জীবনের পড়ন্ত বেলায় মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী ম-লের আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। তার একটিই চাওয়া মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের বাঞ্ছারাম গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী। ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন বীরপ্রতীক আবদুল হাই কমান্ডারের সাথে ৬ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন অপারেশনে অস্ত্র বহন করে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। যুদ্ধকালীন রাজারহাটের ঠাটমারী এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে ডান পায়ে গুলি লেগে তিনি আহত হন। এর পর দীর্ঘদিন চিকিৎসা করে সুস্থ হন। এর মধ্যে দেশ স্বাধীন হলে তিনি আর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগাযোগ রাখেননি। স্বাধীনতার পর তার এলাকায় একাধিক মানুষ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও কেরামত আলী বাদ পড়ে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে নিশ্চুপ হয়ে যান বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এই সৈনিক। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার ঘটনায় এক প্রকার আত্মগোপন করেন মুক্তিযোদ্ধা কেরামত আলী। কোনোভাবেই মানতে পারেননি ওই ঘটনা। এর পর থেকে নীরবেই চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। কেরামত আলী জানান, যুদ্ধকালীন সময়ে আমি তরুণ যুবক। বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। কোনো দিন চিন্তাও করিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে হবে। অসুস্থ হয়েও কোনো দিন কোনো সরকারি সাহায্যেরও প্রত্যাশা করিনি। নিজের জমিজমা বিক্রি করে আজও চিকিৎসা করছি। জীবনের পড়ন্ত বেলায় তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। তার কাছে আমার আকুল আবেদন, আমাদের মতো যেসব মুক্তিযোদ্ধা এখনো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করেন। তিনি আরও জানান, আমার জীবনের শেষ ইচ্ছা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শেষ সম্মানটা যেন পাই। আর কিছুই আমার চাওয়া-পাওয়া নেই। তার মতে তাদের মোগলবাসা এলাকায় এখনো প্রায় ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল বাতেন জানান, কেরামত আলী যুদ্ধকালাীন সময়ে যুদ্ধে গিয়ে আহত হওয়ার কথা শুনেছি। কয়েকবার তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পাঠালেও এখনো মূল তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। তার নাম আবারও ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানান ওই মুক্তিযোদ্ধা নেতা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন