ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা শাহিনুর রহমান রিন্টুর বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার রাস্তা উন্নয়নের ঠিকাদারী কাজ গোপন টেন্ডার করে হাতিয়ে নিয়েছেন মেয়র। এ নিয়ে ঠিকারদারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোস বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে তদন্তপূর্বক টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। ঝিনাইদহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেএস কনস্ট্রাকশনের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক লিখিত অভিযোগে জানান, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু পৌর সভার রাস্তা, কালভার্ট ও ড্রেন সংস্কারের জন্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। গত ২৯ মার্চ ঢাকার একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির নোটিশটি পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে টেন্ডারের অনুলিপি পাঠানোর কথা থাকলেও সেই নিয়ম মানা হয়নি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জেলার সকল এলজিইডি অফিসে সিডিউল বিক্রির নিয়ম থাকলেও কোথাও সিডিউল পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মালেকের বরাবর ঠিকাদারগণ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তিনি হরিণাকুন্ডু পৌরসভার নোটিশ নং-০৩/১৫/১৬ পায়নি বলে লিখিত দেন। অভিযোগ রয়েছে মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টুর অনুগত কয়েকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই টেন্ডারে অংশ গ্রহণ দেখিয়ে নিজেই কাজ হাতিয়ে নিয়েছেন। গত সোমবার পৌরসভার প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে টেন্ডার বাক্স খোলা হয়। সেখানে কাউন্সিলরদেরকেও ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেএস কনস্ট্র্রাকশনের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রটি বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়। অভিযোগপত্রটি গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক, এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও প্রেসক্লাবসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফারুক হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গোপনে টেন্ডার করে মেয়র ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার কাজ হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি কাউন্সিলরদেরও কোন কিছু জানানো বোধ করেননি। তিনি আরো জানান, গত ২৫ ফেব্রয়ারি মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টু ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার কাজ গোপন করেছেন। অথচ তখন পৌরসভায় কোন পরিষদ ছিল না। অবৈধভাবে মেয়র টেন্ডার প্রক্রিয়া করে কাউন্সিলরদের বঞ্চিত করছেন। ৪ কোটি টাকার কাজ গোপন করে সেই টাকায় এক্স করোলা গাড়ি কিনে এনেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু পৌর মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, কাজগুলো টাকা খরচ করে মন্ত্রণালয় থেকে আনতে হয়েছে। এজন্য আমরা নিজেরাই পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে কাজগুলো করে থাকি। অন্যদিকে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার আক্তারুজ্জামান কাজলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখানে আমার কিছু করার নেই। সব কিছুই মেয়রের ইচ্ছায় হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন