শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

দুর্নীতিবাজরা প্রতি মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা

প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

উখিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা

কক্সবাজারের উখিয়ায় পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে চলমান এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দিনে রাত্রে বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকার কারণে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। পুরো উপজেলায় লোডশেডিংয়ের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধুমাত্র কুতুপালং রোহিঙ্গা বাজারে ৫০টি মিটার থেকে দেয়া হয়েছে প্রায় ৬০০ অবৈধ সংযোগ। একটি বাজারের অবৈধ সংযোগের কারণে উখিয়ার সর্বত্র লোডশেডিং বেড়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ডিজিএম নুর হোসেন বললেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সম্প্রতি সরজমিন কুতুপালং রোহিঙ্গা বাজার ও ক্যাম্প পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের কুতুপালং বাজার লাগোয়া বস্তির ভেতর আর একটি শহর। যেন চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার। ছোট ছোট গলিতে মোবাইল, ফার্মেসি, জুয়েলারীসহ শত শত দোকানপাঠ। প্রতিটি দোকানেই ব্যাপক আলোকসজ্জা। চলছে টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার। নাম পরিচয় গোপন করার শর্তে রোহিঙ্গা ফার্মেসি মালিক জসিম উদ্দিন, খাইরুল আমিন কম্পিউটার দোকানি ছৈয়দ হোসন জানান, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য বখতিয়ার মৌলভির কাছ থেকে তারা বিদ্যুৎ সংযোগগুলো নিয়েছেন। তারা জানান, প্রায় ৫০টি মিটার থেকে ৬০০ সংযোগ দেয়া হয়েছে কুতুপালং বস্তি বাজার ও ক্যাম্পে। যা আইনত দ-নীয়। প্রতিটি দোকান থেকে বিদ্যুৎ বাবদ মাসিক ভাড়া নেয়া হচ্ছে বাল্ব প্রতি ৩শ’ টাকা। সে হিসেবে ৬শ’ দোকানের প্রায় ১২শ’ বাল্ব থেকে ৩শ’ টাকা করে মাসে আদায় করা হচ্ছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর বাইরে ফ্রিজ, কম্পিউটার, ফ্যান ও টিভির জন্য রয়েছে আলাদা বিল। অভিযোগ রয়েছে, ৫০টি মিটারের অধিকাংশ মিটার ট্রাম্পারিংয়ের মাধ্যমে ফাঁকি দেয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল। এক্ষেত্রে উক্ত ইউপি সদস্যকে সহয়তা দিয়ে যাচ্ছে উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী। শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাণিজ্যের জন্য এভাবে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। উখিয়ার সর্বত্র বেড়েছে লোডশেডিং। এমন অভিযোগ কুতুপালং এলাকার স্থানীয় সচেতন জনসাধারণের। এদিকে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝেও লোডশেডিং নিয়ে বিরাজ করছে চাঁপা ক্ষোভ। দিনে-রাতে সমান তালে লোডশেডিং হওয়ায় পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে বলে একাধিক পরীক্ষার্থীর অভিযোগ। তারা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ প্রসঙ্গে উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম নুর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোহিঙ্গা বাজার ও ক্যাম্পে অবৈধ সংযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এভাবে লোডশেডিং কেন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি উপর থেকে বিদ্যুৎ যা পাচ্ছি তা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি হলে আমার কিছুই করার নেই। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য এলাকার সচেতন মহলকে যেমনিভাবে ভাবিয়ে তুলেছে আবার চরম ক্ষোভেরও জন্ম দিয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন