শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের বিশাল মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:১১ পিএম

ছবি- ইকবাল হাসান নান্টু


আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মানহানীকর বক্তব্য লেখা, প্রকাশনা-প্রচার এবং বাল্যবিবাহ বিরোধীদের শাস্তি মৃত্যুদ-, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ঈদ আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে দেশের সকল মুসলমান কর্মচারীদের বোনাস প্রদান, বাকস্বাধীনতার ভন্ডামীর নামে নেদারল্যান্ডের এমপি গিয়ার্ট উইল্ডার্সের নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র প্রতিযোগীতা আয়োজনের ঘোষণা দেয়ায় নেদারল্যান্ড দূতাবাসের মাধ্যমে তার ফাঁসির দাবি, পবিত্র দ্বীন ইসলাম অবমাননাকর “জান্নাত” নামক সিনেমা নিষিদ্ধ এর প্রযোজক-পরিচালককে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, আসাদ নূরসহ অন্যান্য সকল সকল নাস্তিকদের ফাাঁসি, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কমপক্ষে ৩ দিন ছুটি, মুসলিম এমপি বাদ দিয়ে ভারতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরএসএস’ এর এজেন্ট উগ্র হিন্দুদেরকে আসন্ন নির্বাচনে অধিক হারে মনোনয়ন দিলে উগ্র হিন্দু প্রার্থীদের ভোট দেয়া বয়কটের দাবিসহ ১৩ দফা দাবীতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১৩টি সংগঠন আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিকদের মুক্তমনা ব্লগ, ইষ্টিশন ব্লগ, ধর্মকারী ব্লগগুলো এদেশে এখনো তীব্র ইসলামবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। নাস্তিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। অথচ পুলিশ, র‌্যাব, বিটিআরসি তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেয়নি, কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণদের ক্ষেপিয়ে দেয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! পুলিশ, র‌্যাব, বিটিআরসি সবাই নীরব ভূমিকা পালন করছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও দন্ডবিধি সংশোধন করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিন্দু থেকে বিন্দুতম অবমাননা করলে বা মানহানীকর বক্তব্য, লেখা, প্রকাশ ও প্রচার করলে তাৎক্ষণিক মৃত্যুদ-ের বিধান করতে হবে।
এনজিও, নারীবাদীরা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বললেও বছরে দেশে প্রায় ৫ লক্ষ ভ্রুণ শিশু হত্যা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুতম্যাকার ইনস্টিটিউটের জরিপ মতে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ১১ লাখ ৯৪ হাজার অবৈধ গর্ভপাত হয়েছে। এর অধিকাংশই হচ্ছে ১৮ বছরের নিচের কুমারী মাতাদের অবৈধ ফসল। এনজিও, নারীবাদী এবং সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা মহল অবৈধভাবে কুমারী মাতা হতে সমর্থন করছে তাই এর বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। এমনকি আইন প্রণয়নও করছে না। কিন্তু বৈধ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, নারীবাদীদের পৃষ্ঠপোষক দেশগুলো ১৬ বা ১৮ বছর বয়সের নীচে বিবাহকেই অনুমতি দিচ্ছে না বরং অবৈধ কুমারী মাতাকেও স্বীকৃতি দিচ্ছে। তাদের অবৈধ সন্তানের ভরণ-পোষণও করছে। ইউএস সেন্টার ফর ডিসিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের সমীক্ষা অনুযায়ী আমেরিকায় প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ১ হাজার ৭০০ কিশোরী মা হচ্ছে। সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিজের (সিএসজে) গবেষণায় দেখা গেছে ব্রিটেনে, ৪৬ শতাংশ শিশু জন্ম নেয় কুমারী মায়ের গর্ভে। ২০১৭ সালে আমেরিকায় ২ লাখের বেশী বাল্য বিবাহ হয়েছে যাদের বয়স ১৫ বছরের নীচে। অথচ এসব দেশের বিরুদ্ধে তথাকথিত প্রগতিবাদী ও নারীবাদীদের প্রতিবাদ নেই। কুমারী মাতা নামক এসব অবৈধ সর্ম্পকের প্রতিকারে জাতিসংঘে তাদের কোন আবেদন নিবেদনও নেই। বরং বাংলাদেশের মতো মুসলমান দেশগুলোতেই তাদের সব অপতৎপরতা। বাল্যবিবাহের বিরোধিতাকারীদের মৃত্যুদ- দিতে হবে। বাল্যবিবাহ বিরোধী ইসলাম বিদ্বেষী এনজিও টেরেডেস হোমস নেদারল্যান্ডস, নিউইয়র্ক ভিত্তিক প্রোটেকটিং হিউম্যান রাইটস (পিএইচআর), যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেভ দ্য চিলড্রেন, ইহুদী স্বার্থ সংরক্ষণকারী ইউনিসেফ, জর্জ সরোসের অর্থায়নে পরিচালিত ব্র্যাক নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে বাল্যবিবাহ নিরোধ নামক কুফরী আইন প্রত্যাহার করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অবমাননার কারণে তাদেরকে মৃত্যুদ- দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, নেদারল্যান্ডের এমপি গিয়ার্ট উইল্ডার্স কর্তৃক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র প্রতিযোগীতা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নেদারল্যান্ড সরকার তার কর্মকান্ডকে প্রকাশ্যে সমর্থন না করলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তার অমার্জনীয় অপরাধ বন্ধ করার কথাও বলেনি। বরং পশ্চিমা খ্রিষ্টান রাষ্ট্রগুলো বাক স্বাধীনতার নামে দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের উপর পরিকল্পিত আক্রমণের সুযোগ করে দিচ্ছে। অথচ আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার ঘোষণার চতুর্থ অনুচ্ছেদে স্বাধীনতার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে: “স্বাধীনতার অর্থ হল এমন সব কিছু করার ক্ষমতা যা অন্য কারো ওপর আঘাত হানে না বা অন্য কারো ক্ষতি করে না।” আন্তর্জাতিক আইনে এটা স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, বাক স্বাধীনতা সীমিত এবং এর নামে যে কোনো সীমারেখা লঙ্ঘন করা যাবে না।
সুতরাং বাক-স্বাধীনতার নামে ভন্ডামী না করে অবিলম্বে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকারী কুখ্যাত এমপি গিয়ার্ট উইল্ডার্সকে ফাঁসি দিতে হবে। তার সহযোগী সকল নাস্তিকদেরও ফাঁসি দিতে হবে। অন্যথায় নেদারল্যান্ডের কুটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন করতে হবে সাথে সাথে মুসলিম বিশ্বকে নেদারল্যান্ডের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করতে হবে।
তাই মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়ার বিপরীতে নেদারল্যন্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরীতে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে এবং সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করতে হবে। এতে দেশে-বিদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং জনগণ সরকারকে ধর্মপ্রাণদের সরকার হিসেবে গণ্য করবে।

বক্তারা বলেন, মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন, অস্ট্রেলিয়ায় ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ভারতে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি লাভনারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রাখায় অষ্ট্রেলিয়ার সিডনিতে “গ্লোবাল সামিট অব উইমেন” লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন। তাই দেশে নারী পুরুষ নির্বিশেষে উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নৌকার কোনো বিকল্প নেই। আগামীতে নৌকাকে বিজয়ী করে আবারও সেই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি মির্জা ফখরুলকে গ্রেফতার করতে হবে।

বক্তারা বলেন, পহেলা বৈশাখের উৎসব মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পহেলা বৈশাখ মুসলমানদের ঈদ নয়। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ঈদ সাইয়্যিদে ঈদে আযম সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ। কাজেই যেখানে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সেখানে মুসলমানদের পহেলা বৈশাখের বোনাস বাদ দিয়ে মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উপলক্ষ্যে বোনাস দেয়া উচিত। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে নববর্ষ উদযাপন ভাতা চালু করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের সকল মুসলমান কর্মচারীকে নববর্ষের পরিবর্তে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে বোনাস প্রদান করতে হবে।

বক্তারা বলেন, ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানদের স্পর্শকাতর ধর্মীয় অনুভূতি সম্পন্ন “জান্নাত” নামক সিনেমা তৈরী করে অমার্জনীয় গর্হিত অপরাধ করেছে এস এস মাল্টিমিডিয়। এর আগে জাজ মাল্টিমিডিয়াও দ্বীন ইসলামের অবমাননাকর সিনেমা তৈরী করেছে। ইনুর চক্রান্তে বাংলাদেশ ভারত যৌথ সিনেমা চালুর পর থেকে দ্বীন ইসলামের অবমাননাকর সিনেমা তৈরী হচ্ছে। এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দ্বীন ইসলাম বিদ্বেষীদের যেকোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। সারাদেশে এই কুখ্যাত সিনেমা অবিলম্বে বন্ধ না করলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি এর পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক এবং নায়ক-নায়িকা সাইমন সাদিক ও মাহিয়া মাহি’কে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, মুসলিম এমপি বাদ দিয়ে ভারতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরএসএস’ এর এজেন্ট উগ্র হিন্দুদের আসন্ন নির্বাচনে অধিক হারে মানোনয়ন দিয়ে দেশে সাম্প্র্রদায়িক সন্ত্রাস লাগানোর চক্রান্ত করছে বিএনপি’র গয়েশ্বররা। মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে ভারতের সন্ত্রাসী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) অপতৎপরতা চালাচ্ছে। সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএস ৩০ শতাংশ হিন্দু এমপি মনোনয়ন দেয়ার এমপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে ঢুকানোর জন্য দেনদরবার করছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নালিশকারী আরএসএস এজেন্ট রানা দাশগং এই অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে। আরএসএস এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বিএনপি’র গয়েশ্বরগং।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অবস্থান করে ইতিমধ্যে এদেশে গরু কোরবানী নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খিষ্টান নামের সাম্প্রদায়িক পরিষদ। এসব মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দু এমপি হলে ভারতের মতো বাংলাদেশেও গরু কোরবানী করলে ঘর থেকে বের করে নিয়ে মুসলমানদের পিঠিয়ে হত্যা করবে। জাতিগত দাঙ্গা লাগিয়ে মুসলিমদের পাকিস্থান যেতে বলবে। গয়েশ্বর, সুনীল শুভ, পংকজদের চক্রান্ত রুখে দেয়া হবে। তাদের চক্রান্ত এদেশবাসী মুসলমানরা মেনে নিবে না। যারা মুসলিমদের বাদ দিয়ে উগ্র হিন্দু এমপি অধিক হারে মনোনয়ন দিবে তাদের আগামী ভোটে বয়কটের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত প্রতিহত করবে মুসলমানরা।

বক্তারা বলেন, দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেফতারের পর দেশে ও বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন হচ্ছে। তার মুক্তি দাবি করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় শহীদুল দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিদেশী অপশক্তির দালাল। বিদেশীরা তার মাধ্যমে দেশ বিরোধী কাজ করাতে চেয়েছিল। তার গ্রেফতারে দেশ ভয়াবহ ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পেয়েছে। শহীদুলের মতো দেশদ্রোহীরা দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে লিপ্ত। এ তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী বিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্নতাবাদে চক্রান্তে জড়িত সুলতানা কামাল চক্রবর্তী, ঢাবি অধ্যাপক মেজবাহ কামালসহ সিএইচটি কমিশন সদস্যরা। এছাড়া রয়েছে কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী ইহুদী জর্জ সরোজের ফান্ডে পরিচালিত ড. ইউনুস, ফযলে হাসান আবেদরা। দেশের বিরুদ্ধে কলকাটি নাড়ানো এসকল ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেফতার করতে হবে।

বক্তারা বলেন, নাস্তিকরা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিকদের মুক্তমনা ব্লগ, ইষ্টিশন ব্লগ, ধর্মকারী ব্লগগুলো এদেশে এখনো তীব্র ইসলামবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। নাস্তিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। গণজাগরণ মঞ্চের কুখ্যাত নাস্তিক ‘মাহমুদুল হক চরম ইসলামবিদ্বেষী আইডি নয়ন সাহা, সুষুপ্ত পাঠক, জুলিয়াস সিজার, জ ই মামুন, রাজেশ পাল, সুপ্রীতি ধর’রা এদেশে তীব্র সাম্প্রদায়িক উস্কানী ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি নাস্তিক আসাদ নুরকে জামিন দেয়ায় নাস্তিকরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আসন্ন নির্বাচনের আগ মুহুর্তে দেশে পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে ৫মে’র মতো দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। অবিলম্বে আসাদ নূরসহ অন্যান্য সকল নাস্তিকদের গ্রেফতার করে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে।

বক্তারা বলেন, পবিত্র মুহররম মাসের দশ তারিখ অর্থাৎ ১০ই মুহররম “আশূরা” দিনটি বিশ্বব্যাপী এক আলোচিত দিন। সৃষ্টির সূচনা হয় এই দিনে এবং সৃষ্টির সমাপ্তিও ঘটবে এ দিনেই। বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এ দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা এ দিনেই সংঘটিত হয়। তাছাড়া পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা এদিনেই সংঘঠিত হয়েছে। ৬১ হিজরী সনের এ দিনে পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ৩য় ইমাম সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন।
বক্তারা বলেন, পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে “তোমরা মুহররম মাসকে এবং এর মধ্যস্থিত আশূরার দিনকে সম্মান করো। যে ব্যক্তি মুহররম মাসকে তথা আশূরার দিনকে সম্মান করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দ্বারা সম্মানিত করবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করবেন।” সঙ্গতকারণেই সারাদেশে ব্যাপক সমারোহে সব স্কুল কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানে পবিত্র আশুরা শরীফ পালনের ব্যবস্থা নিতে হবে। ৩দিন ছুটি দিতে হবে। পাশপাশি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধেরপক্ষের সরকারের বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা সব সময় সরকারের দোষ ধরতে ব্যস্ত সরকারের ভাল কর্মকান্ডও তাদের পছন্দ হয় না। দেশের জিডিপি’র উন্নতি, কর্মসংস্থান, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া ইত্যাদি অনেক ভাল কাজ থাকলেও তারা সরকারের সমালোচনা করে থাকে। তারা ‘দেশ চালাচ্ছে- র’। ‘ভারতের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নতজানু’। ‘বাংলাদেশ ভারতকে উজার করে সব দিচ্ছে’। ‘আওয়ামী লীগ ভারতের কথায় উঠে বসে’ এবং ‘ভারতই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখেছে’ ইত্যকার আজগুবী অপপ্রচার করে জনগণকে আওয়ামী লীগ বিমুখ করতে চায়। আওয়ামী লীগের নামে এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে হবে।

বক্তারা বলেন, ইসলামের নাম ধারণ করে অনৈসলামিক কাজ করছে বিভিন্ন ইসলামী দলগুলো। ইসলামের দোহাই দিয়ে ভোট চাইছে। নিজের দলকে ভোট দিলে জান্নাত পাওয়া যাবে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য ওলামা লীগ ইসলামের নাম ব্যবহার করে না। ‘ইসলামী ওলামী লীগ’ দাবী করে না। কিন্তু ওলামা লীগ পবিত্র দ্বীন ইসলামের কথা বলে। যারা মুখে ইসলাম বলে আর কাজ করে ধর্মব্যবসায়ীদের মতো, এসকল ভোট ব্যবসায়ী ধর্ম ব্যবসায়ী দলগুলোর নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

বক্তারা বলেন, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার জন্য স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আদেশ করেছেন। যা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে পালন করেছেন, হযরত ছাহাবায়ে ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও পালন করেছেন হযরত আউলিয়ায়ে ক্বিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও পালন করেছেন। এদেশে সরকারীভাবে সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ প্রচলন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে। এ যাবত কাল পর্যন্ত সরকারীভাবে প্রতিবছর পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালিত হয়ে আসছে। সেই পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র মীলাদ ক্বিয়াম শরীফ উনার বিরোধীতা করে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দুশমন হওয়ার পাশাপশি নিজেদের রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে প্রমাণ করেছে ওহাবী-সালাফী গোষ্ঠী। শবে বরাত, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ এবং মাজার শরীফ জিয়ারত ইত্যাদি আমলেরও বিরোধীতা করছে ওহাবী-সালাফী-আইএস গোষ্ঠী। এসব নেক আমলের বিরোধীতার মাধ্যমে এক দিকে তারা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী অন্যদিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত আমলগুলোর বিরোধীতা করার কারণে রাষ্ট্রদ্রোহী। অবিলম্বে এসব ওহাবী-সালাফী-আইএস সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে গ্রেফতার করতে হবে।

বক্তারা বলেন, পবিত্র দ্বীন ইসলামে সমকামিতা সুস্পষ্ট হারাম। ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হারাম একটি বিষয়কে এদেশে ভালবাসার স্বাধীনতা’র নামে ছড়িয়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালানো হলেও প্রশাসন বাঁধা দিচ্ছে না বিষয়টি রহস্যজনক। গত ৭ সেপ্টেম্বর একুশে টিভির সাংবাদিক অঞ্জন রায় তার ফেসবুক ষ্ট্যাটাসে ভারতের মতো বাংলাদেশে সমকাম চালু করার কথা বলেছে। কিন্তু এই সমকামী অঞ্জন রায়কে গ্রেফতার করা হয়নি। বাংলাদেশে আইনত সমকামী হওয়া নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সমকামিতা প্রচলনের দাবী করায় অবিলম্বে অঞ্জন রায়সহ সকল সমকামীদের গ্রেফতার করতে হবে।
সমাবেশ ও মানবন্ধনে সমন্বয় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি- পীরজাদা, পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল)। বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সহ সভাপতি- মাওলানা মুহম্মদ শোয়েব আহমেদ গোপালগঞ্জী, সাংগঠনিক সম্পাদক- হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী সভাপতি বাংলাদেশ ফেৎনা প্রতিরোধ কমিটি, লায়ন আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ মুজিবুর রহমান আল মাদানী, হাফেজ ক্বারী মুহম্মদ শাহ আলম ফরাজী, হাফেজ মুহম্মদ আব্দুল বারী, কারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামান আল কাদেরী, আলহাজ মুহম্মদ খোরশেদ আলম রেজভী, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আল আমীন, আলহাজ্জ মাওলানা রফিকুল ইসলাম সিদ্দীকি আল কুরাইশি, হাফেজ মাওলানা ওমর ফারুক, মুহম্মদ গরীব মাহাবুব (রুপগঞ্জ), হাফেয মাওলানা মুহম্মদ খালেদ হাসান (মির্জাগঞ্জ), মৌলভী মুহম্মদ মোকাম্মেল হুসাইন, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল কাদের প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ চেয়ারম্যান- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার। মিছিল শেষে শহীদ বঙ্গবন্ধু রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রূহের মাগফিরাত কামনা করে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হায়াতে তৈয়বার জন্য দোয়া মোনাজাত করেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন