স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
বন্দর উপজেলার মদনপুরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মদনপুর রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক নাজমুল হাছানকে বহিষ্কারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। গত শনিবার ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকে বের হতে চাইলে কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীদের আটকে দেয়। পরে স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম মনু ও সংরক্ষিত নারী প্রতিনিধি রাহিমা বেগম প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়। এদিকে গতকাল রোববার সকালে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল হাই ভূইয়ার সভাপতিত্বে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পূর্বের দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পুনরায় ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক প্রতিনিধি খোকা ভূইয়া, মনিরুল ইসলাম মনু, এমরান খন্দকার, হাজী মোঃ কামাল হোসেন, মুহিদ ভূইয়া ও নারী অভিভাবক সদস্য রাহিমা বেগম। জানা যায়, গত ২৯ মার্চ ছাত্রীদের কুপ্রস্তাবকারী প্রধান শিক্ষক নাজমুল হাছানকে ১৫ দিনের জন্য বরখাস্ত করে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি। এরপর গত ৬ এপ্রিল এক সভায় ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গতকাল পুনরায় ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মদনপুর রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ নাজমুল হাছান দীর্ঘদিন ধরে তার ভাড়া বাসায় ওই স্কুলের ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়িয়ে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় ওই স্কুলের দশম শ্রেণীর ৫/৬ জন ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের বাসায় প্রাইভেট পড়তে এলে ওই সময় প্রধান শিক্ষক স্কুলের এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাবের বিষয়টি অডিও রেকর্ডিং মাধ্যমে এলাকায় জানাজানি হলে এ নিয়ে সচেতন মহল প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ নাজমুল হাছানের ভাবমূর্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে মদনপুর এলাকাসহ এর আশপাশের এলাকায় চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ নাজমুল হাছানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে মদনপুর রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুল হাই ভূইয়া জানান, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে প্রাথমিকভাবে ১৫ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাকে সব ধরনের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও পূর্বের দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পুনরায় ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমানের হস্তক্ষেপ কামনা করছে অভিভাবকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন