এবার ভূমিদস্যুদের চোখ পড়েছে ভিক্ষুক পল্লীতে। এরই মধ্যে দুই নারী ভিক্ষুককে বিতাড়িত করে তাদের বসতবাড়ি দখলে নিয়েছে দুই ভূমিদস্যু। অপর ১৪ ভিক্ষুক পরিবারকেও উচ্ছেদ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওই ভূমিদস্যুরা। কারণে অকারণে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে হামলা। মারপিটসহ দেওয়া হচ্ছে হত্যার হুমকি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের অদূরে চিরিরবন্দরের দেবীগঞ্জ বাজার এলাকায়।
জানা গেছে, সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র মো. আমজাদ হোসেন সরকার ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা লাইফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় সৈয়দপুর শহরের কোলঘেঁষা দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের দেবীগঞ্জ বাজারের পাশে ৪৪ শতাংশ জমি কিনে ১৬ ছিন্নমূল ভিক্ষুক পরিবারকে পুনর্বাসন করেন। সে সময় প্রত্যেক ভিক্ষুককে সোয়া দুই শতাংশ জমি নিজ নিজ নামে কবলা দলিল করে দেওয়া হয়। বর্তমানে সেই ভিক্ষুকপল্লীতে কুনজর পড়েছে ওই এলাকার কতিপয় ভূমিদস্যুর। ভূমিদস্যুরা তাদের উচ্ছেদে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ভিক্ষুক কমলা বেওয়া (৭৫) ও ছমিনা বেওয়া (৭০) জানান, ওই এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে কুখ্যাত ডাকাত একরামুল হক ও আলিমুদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেনের ভয়ে কিছু দিন আগে ভিখারিনী হেনা বেওয়া ও ছমিরন নেছা জীবনের ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যান। এ সুযোগে তারা ওই দুজনের বাড়ি দখল করে নিয়েছে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আখতার হোসেনের সহযোগিতায় মৃত লাইলী বেগমের জায়গা দখল করে সেখানে ঘর তোলে একরামুল হক। এ সময় প্রতিবেশীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়। গুরুতর আহত নুরুন নাহার (৪৫), ময়জান (৫৫) ও রফিকা (৪৮) বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশ আসেনি। বর্তমানে আমরা ১৪ পরিবার আতঙ্কে আছি। আমাদের হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এ নিয়ে ঘটনাস্থলে কথা হলে ফতেজংপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আখতার হোসেন ঘর তোলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এলাকায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে ওসির নির্দেশে আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে লাইলীর ওয়ারিশ কেউ ফিরে এলে ঘরসহ জমি তাকে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ লুনার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান।
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারিছুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি মীমাংসা করতে বলেছিলাম, জমি দখল করে ঘর তুলতে নয়।
সৈয়দপুর পৌরসভা মেয়র মো. আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ভিক্ষুকদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি আমি মোবাইলে ওসিকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন