বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ পটিয়ায় ইউপি নির্বাচন

প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এস কে এম নূর হোসেন, পটিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পটিয়ায় আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়ন বাণিজ্যের গেঁড়াকলে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নৌকার টিকিট পেলেই নির্বাচনে নিশ্চিত বিজয় (ভোটবিহীন) এই আশঙ্কা করে মনোনয়ন প্রার্থীরা নৌকার টিকিট পেতে যেমন মরিয়া হয়ে উঠেছে, তেমনি টিকেটদাতারা দিন দিন টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। মনোনয়ন বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আ.লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনছে মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে দক্ষিণ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনসহ পটিয়া ও কর্ণফুলীতে বিক্ষোভ সমাবেশ মিছিল মানববন্ধন হয়েছে। পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী এ সাতটি উপজেলা মিলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা। এ উপজেলাগুলোর বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নৌকার প্রতীকের জন্য জেলা কমিটির পাঁচ নেতা প্রায় ১০ কোটি টাকা মনোনয়ন বাণিজ্য চালিয়েছে বলে নেতৃবৃন্দের অভিযোগ। চন্দনাইশ উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব মাহমুদ শিমুল, আ’লীগ দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দীনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ করেছে। তিনি বলেন, পটিয়াতে মনোনয়ন নিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাণিজ্য হয়েছে। কর্ণফুলী থানা আ.লীগের সদস্য ও শিকলবাহা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম বকুল বলেন, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে জামায়াতের সমর্থক হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী, শিকলবাহা ইউনিয়নে ছালেহ, জুলধা ইউনিয়নে নুরুল হক, চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে সাবের আহমদসহ পাঁচটি ইউনিয়নে আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে অন্তত দেড় কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নে ইব্রাহিম বাচ্চু নামে এক অরাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে ৩০ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন কৃষক লীগের সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বাদশা বলেছেন, কুসুমপুরা ইউনিয়নে গতবার নির্বাচন করে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন সাবেক সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম মনা। এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন এমনটাই আশা ছিল। উপজেলা তরুণ আ.লীগ নেতা এম এ এজাজ চৌধুরী জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে তৃণমূল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৭জনের নাম জেলা কমিটিতে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে যেকোন ১জনকে মনোনয়ন দিলে তৃণমূলের কোন আপত্তি থাকবে না। কিন্তু তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন তালিকায় নাম দিয়েছে। ধলঘাটের বর্তমান চেয়ারম্যান সালামত উল্লাহ মল্ল বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আ’লীগের মনোনয়ন দিচ্ছে জেলা আ’লীগ। এখানে তৃণমূলের কোন মতামত গ্রহণ করা হচ্ছে না। তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে আ’লীগের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে দলের সাথে একাত্ম হয়ে অদ্যাবধি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধালীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। খরনা ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০১১ সালে ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির প্রার্থীর সাথে ৩ ভোটের ব্যবধানে তিনি হেরে যায়। ইউনিয়নের তৃণমূলের নেতাকর্মীর মতামত ও উপজেলা আ’লীগের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে তার নাম এক নম্বরে রেখে জেলা কমিটিতে পাঠানো হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে শহীদুল আলী মঞ্জু নামে একজনের নাম এক নম্বরে রেখে মাহবুবের নাম দুই নম্বরে দিয়ে পাঠায় বলে তার অভিযোগ। মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রতিবাদে কুসুমপুরা ইউনিয়নে ইতিমধ্যে দুই দফায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেন, শোভনদ-ী বরলিয়া ইউনিয়নে উপজেলা কমিটি কর্তৃক মনোনীত চেয়ারমান প্রার্থীর তালিকা বাদ দিয়ে জেলা কমিটি অন্য নাম দিয়ে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে জমা দিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছে বলে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন