বঙ্গোপসাগরের সীতাকুণ্ড অংশে সাগরে প্রায় ১০ কি. মি. পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে হঠাৎ জেগে উঠেছে নতুন চর। এতে শিপইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি আবারো হুমকির মুখে পড়েছে। জানা গেছে, লোহার চাহিদা পূরণে জাহাজ ভাঙা শিল্প ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। এটি ভাসমান লৌহ খনি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। এ শিল্প থেকে প্রাপ্ত লোহার উপর নির্ভর করে চলতে থাকে দেশের নির্মাণ শিল্প। ২০০০ সালে ইয়ার্ড সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৫টি। আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেয়ে ইয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫০টিতে। শিপব্রেকিং এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ ও জাহাজ ভাঙা ইয়ার্ড মালিকরা জানালেন, এ শিল্প ক্রমশ বিকাশ লাভ করে দেশ বিদেশে নিজেদের অবস্থান ও গুরুত্ব তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এরপর ২০১১ সালে সরকার জাহাজ ভাঙা কার্যক্রমকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। এই শিল্প থেকে সরকার বার্ষিক ১২শ’ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় করে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে উপজেলার ফৌজদার হাট থেকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর ১০ কি. মি. পর্যন্ত বিভিন্ন স্পটে সাগরে চর জেগে ওঠেছে। দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় সীতাকুণ্ড শিপব্রেকিং ইয়ার্ড মালিকরা নতুন করে জাহাজ আমদানি করতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানালেন আরেফিন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের মালিক কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডে বর্তমানে বিশাল এলাকায় চর জেগে উঠেছে তা জাহাজ ভাঙা শিল্পের জন্য বড় রকমের হুমকি বলা চলে। এভাবে চর জাগতে শুরু করলে সামনে জাহাজ আমদানি করে বীচিং করা যাবেনা। ফলে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি আবারো অনিশ্চতায়।
শিল্পপতি শওকত আলী চৌধুরী, ম্যাক কর্পোরেশনের মালিক মাষ্টার আবুল কাসেমসহ উপস্থিত সকল ইয়ার্ড মালিকগণ এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি জরুরী মোকাবিলা করা না গেলে আগামীতে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে জানালেন তারা। এদিকে, ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আনা স্ক্র্যাপ জাহাজগুলো সীতাকুণ্ডে বিভিন্ন ইয়ার্র্ডে নিয়ে আসতে হয় আমাকে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে উপজেলার ফৌজদারহাট থেকে শীতলপুর পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে হঠাৎ চর জেগে ওঠায় কয়েকটি জাহাজ সাগরে আটকা পড়েছে। বীচিং করা যাচ্ছেনা এবং স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি হুমকির মুখে পরেছে। ফলে ১২শ’কোটি টাকার ও বেশি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। শুধু তাই নয় কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হবে দেশের অর্ধলক্ষ শ্রমিক। অন্যদিকে লৌহ এবং নির্মাণ শিল্প চরম অস্থিরতা দেখা দিবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন