টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে
তীব্র দাবদাহে উত্তরাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রচ- গরমে ডায়রিয়া, হাঁপানি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জেলা-উপজেলা হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিকে শত শত রোগী ভর্তি হচ্ছে। হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। তীব্র দাবদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা জন জীবনকে আরো দুর্বিসহ করে তুলেছে। নির্দিষ্ট সময় লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিয়েও তা বাস্তবায়নের ব্যর্থ হচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। কখন বিদ্যুৎ আসবে কখন যাবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডয়ের নিশ্চিয়তা দিতে পারছে না। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের সাথে সাথে শহর বন্দরে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট জেলার পৌরসভাগুলো যথাসময়ে পানি সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে। গ্রীষ্মের প্রখর খরতাপে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। শহর বন্দর গ্রামে নলকূপে পানি উঠছে না। বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে মানুষ। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে হিসেবে শুষ্ক মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। কিন্তু চলতি মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রেকর্ড পরিমাণ নিচে নেমে গেছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর সবচেয়ে বেশি নিচে নেমেছে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। এসব জেলায় পানির স্তর ৪৫ ফুট থেকে ৫০ ফুট নিচে নেমেছে। পানির স্তর অতিরিক্ত নিচে নেমে যাওয়ায় লক্ষাধিক নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। বেসরকারি হিসাবে এর সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে উত্তরাঞ্চলের পরিবেশও আরো রুক্ষ হয়ে উঠেছে। আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য। প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগ ও কয়েকটি সংস্থার জরিপে উত্তরাঞ্চলে ৩০ প্রজাতির পশুপাখির বিলুপ্তি ঘটেছে বা বিলুপ্তির পথে। আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না। বৃষ্টির বদলে প্রায় প্রতিদিনই মাঝারি ও বড় ধরনের কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন