শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

যশোরের বেকার যুবকরা ‘হেলিকপ্টার’ চালক

যশোর থেকে শাহেদ রহমান | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

মাটিতে চলা হেলিকপ্টার, বেকার যুবকদের অবলম্বন। যশোরের বিভিন্ন রুটে চলছে যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার। নতুন কোনো ব্যক্তি আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে এলে হেলিকপ্টারে চলেন শুনেই প্রথমে থমকে যান। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের কাছে খুবই পরিচত বাহনটি। আগে যাত্রীবহনকারী বাইসাইকেলকে বলা হতো হেলিকপ্টার। বাইসাইকেলের বদলে এখন যাত্রী পরিবহনে ব্যবহার হচ্ছে মোটরসাইকেল। ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলই এখাকার হেলিকপ্টার। যা চালিয়ে অনেক বেকার যুবক জীবিকা নির্বাহ করছেন। তারা নিজেরাই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। তাদের কথা সহজ শর্তে ঋণ পেলে খুব দ্রুতই তারা স্বাবলম্বী হতে পারতেন। কিন্তু নেই কোনো সহযোগিতা। গোটা জেলার বিভিন্ন রুটে বিশেষ করে গ্রামগঞ্জের রাস্তায় অন্তত হাজারখানেক ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চলে।

যশোর জেলার মনিরামপুর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা। সাড়ে চার লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ উপজেলায় নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের বসবাস। শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষ উপজেলাটিতে কৃষির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ভবদহের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে তারা থমকে আছেন। ভবদহ ও কপোতাক্ষ অনেককেই বেকার করেছে। জীবিকা নির্বাহের জন্য মনিরামপুরের প্রত্যন্ত জনপদের একদল যুবক বিভিন্ন রুটে মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালানোর উদ্যোগ নেয় বেশ কয়েকবছর আগে। সেই থেকে পেশাটিতে বেকার যুবকদের সংখ্যা বাড়ছেই। যার নাম দেয়া হয় হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টার চলে মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর ও রাজগঞ্জ এমনকি যশোর শহরতলী চাঁচড়া এলাকাতেও।

মনিরামপুর, রাজগঞ্জ ও চাঁচড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বিকল্প যান হেলিকপ্টারের খুবই কদর। একেবারে কম ভাড়ায় এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় যাতায়াত করা যায়। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে লোকজন চলাচল করে থাকে হেলিকপ্টারে। হাইওয়ে সড়কেও বাস, মিনিবাসের মতোই সব সময় চলছে হেলিকপ্টার। একজন হেলিকপ্টার চালক দুই-তিনজন মহিলা কিংবা পুরুষ যাত্রী নিয়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ছুটছে তো ছুটছেই। মনিরামপুর উপজেলা সদরে কয়েকটি স্থানে হেলিকপ্টার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। নতুন বাস স্ট্যান্ড, রাজগঞ্জ মোড়, ঝিকরগাছা, দোলখোলা স্ট্যান্ড, দুর্গাপুর মোড় ও কেশবপুর মোড়সহ বিভিন্নস্থানের হেলিকপ্টার স্ট্যান্ডে অসংখ্য মোটরসাইকেল লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে যাত্রী পরিবহনের জন্য। মনিরামপুরের হেলিকপ্টার চালক ইব্রাহিম বললেন, কিছুদিন আগেও আবাদি জমি পানিতে ডুবে যাওয়ায় চোখেমুখে অন্ধকার দেখছিলাম। একজনের সহায়তায় হেলিকপ্টার চালানো পেশায় যুক্ত হয়ে এখন আটজনের খানেওয়ালার সংসার মোটামুটি ভালোই চলছে। তার মতে, এই পেশায় ঝুঁকি আছে ঠিকই, কিন্তু এতে বেকার সমস্যার অনেক সমাধান হয়েছে গোটা অঞ্চলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন