রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

প্রধান দুই দলেই বিদ্রোহের আগুন কদর বাড়ছে বেকার যুবকদের

প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে

আগামী ৭ মে হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোটা উপজেলায় বয়ে যাচ্ছে নির্বাচনের মহোৎসব। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্র্থীদের কাছে কদর বাড়ছে বেকার যুবকদের। এবার দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হওয়ার সুবাদে এক প্রার্থীর কর্মী অন্য প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করতে পারছে না। এরপরও কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর আত্মীয়তা ও বন্ধুত্বের টানে বিএনপি আ.লীগের বহু নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। এবার ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্র্থীদের প্রচার-প্রচারণা বেশি দেখা যাচ্ছে। বিএনপি ও আ.লীগের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছেন। আ.লীগ ও বিএনপি উভয় দলের প্রার্থীদের চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নাম বেশি আলোচনায় আসছে ভোটারদের মুখে। এসব বিদ্রোহী প্রার্থী সারা বছর দলের জন্য বিভিন্ন সময় ত্যাগ স্বীকার করলেও বর্তমানে তাদেরকে দল মূল্যায়ন না করায় তারা ক্ষোভে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তবে এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীর আবার এলাকায় ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবার ভোটের মাঠ দখল করে আছে। তবে বড় দুই দলের রাজনৈতিক প্রার্থীদের পরাজয়ের একটি কারণ হতে পারে তাদের নিজ ঘরের বিদ্রোহীদের জন্য। এদিকে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন দলীয় প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া মানেই অনেক বড় পাওনা। যে প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচন হচ্ছে ওই প্রতীক নিয়ে আবার মহান জাতীয় সংসদ নির্বাচনও হচ্ছে। দলীয় প্রতীক যে প্রার্থী পেয়েছেন তারা দলীয় প্রতীককে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে পেয়েছেন বলে মনে করেন। যেন তাদের রাজনৈতিক জীবনের ভবিষ্যতে রাজনীতির কোনো বাধা না আসে সেজন্য তারা দলীয় প্রতীক পেয়ে ভেজায় খুশি। তবে এবার ভোট কেমন হবে তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে শুরু কয়েছে নানান আলোচনা ও সমালোচনা। গত কয়েক দিন আগে বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে জানা গেছে, এবার ইউপি নির্বাচনের ভোটাররা বেশির ভাগ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। আবার কিছু কিছু ইউনিয়নে ভোটাররা আলোচনা করছেন আ.লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনে জয়ী হলে এলাকার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন বরাদ্দ আনতে পারবেন। তবে বিএনপির প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও সরকার হতে এলাকার উন্নয়ন কাজের জন্য বরাদ্দ আনতে পারবে কিনা তা নিয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এদিকে ১৯ এপ্রিল প্রার্থীরা তাদের প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণায় নির্বাচনের মাঠ-ঘাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রার্থীদের শুরু হয়েছে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে দোয়ার জন্য ঘুরপাক। এর মাঝে আবার এক প্রার্থী অপর প্রার্থীকে পাল্টাপাল্টি হুমকিও প্রধান করছে বলে বিভিন্ন প্রার্থী অভিযোগ করেন। সব মিলে আগামী ৭ মের হাটহাজারী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ ভোট কেমন হবে তা নিয়ে ভোটারদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা যায়, উপজেলার ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর, ছিপাতলী, গুমারমন্দন, নাঙ্গলমোড়া, মেখল, গড়দুয়ারা, উত্তর মার্দাশা, দক্ষিণ মার্দাশা, শিকারপুর, বুড়িশ্চর, চিকনদন্ডি ও ফতেপুর তার মধ্যে শিকারপুর ইউনিয়নের বিএনপির প্রার্থী ইউছুপ খান কারাগারে থেকে নির্বাচন করছেন। শিকারপুর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্র্থী হয়েছেন মোঃ সেলিম খান, আজাদ খান, এস এম আবু বক্কর (নৌকা), এস এম জাবেদ, মোঃ ইউছুপ খান, (ধানের শীষ), বুড়িশ্চর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন হোসনেআরা বেগম, মোঃ বখতেয়ার উদ্দীন (নৌকা), ওসমান গনি (ধানের শীষ), মোঃ রফিক (স্বতন্ত্র আনারস), মোঃ নুরুল ইসলাম, জাহেদ হোসাইন, ছিপাতলী ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন মোঃ ইসমাইল (নৌকা), আলী আকবর (ধানের শীষ), মোঃ জসিম উদ্দীন, মোঃ নুরুল আহম্মদ, নাঙ্গলমোড়া ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছে মোঃ সিরাজুল হক বাবুল (নৌকা), কামাল উদ্দীন (ধানের শীষ), মোঃ হারুণ, দক্ষিণ মার্দাশা হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আবদুল মজিদ, মোঃ আবু তাহের, মোঃ নুরুল আমীন, মোঃ কামাল, মোঃ কামাল উদ্দীন (ধানের শীষ), আরমান আহম্মদ (নৌকা), মোঃ আলমগীর, উত্তর মার্দাশা হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনজুর হোসাইন মাসুদ (নৌকা), মোঃ খোরশেদ আলম, মোঃ মুছা আলম (ধানের শীষ), আবু তাহের, মোঃ জাকের হোসেন, গড়দুয়ারা ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ ফোরকান (ধানের শীষ), মোঃ সরোয়ার আলম (নৌকা), মোঃ সেকান্দর আলম, ফরহাদাবাদ ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ হোসাইন মনজু, মোঃ আতিকুল্লা চৌধুরী, মোঃ আবদুল মালেক, মোঃ গোলাম মোস্তফা (ধানের শীষ), মোঃ ইদ্রসি মিয়া (নৌকা), মোঃ নাছির উদ্দীন, মেখল ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সালাউদ্দীন চৌধুরী (নৌকা), মোঃ দিদুরুল আলম (ধানের শীষ), মোঃ সৈয়দ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (স্বতন্ত্র আনারস), মির্জাপুর ইউপি হতে মোঃ নুরুল আবছার (নৌকা), মোঃ আবদুর রহিম (ধানের শীষ), মোঃ ইসহাক (স্বতন্ত্র আনারস), ফতেপুর ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্র্থী অ্যাডভোকেট শামীম (নৌকা), মোঃ জাকের হোসেন (ধানের শীষ), ধলই ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আলমগীর (নৌকা), এ এইচ এম জসিম উদ্দীন জিকু (ধানের শীষ), চিকনদন্ডি ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্র্থী মোঃ সেলিম উদ্দীন (ধানের শীষ), হাছানুজ্জামান বাচ্চু (নৌকা), হাজী হেলাল (স্বতন্ত্র আনারস), গুমানমন্দন ইউপি হতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মজিব (নৌকা), মোঃ জামাল উদ্দীন (ধানের শীষ)। এদিকে ১৪ ইউনিয়নের মোট ভোটারের সংখ্যা গড়দুয়ারার ভোটার সংখ্যা ৭৮১৬ জন, উত্তর মার্দাশা ১৬৩৬৪ জন, ফতেপুর ২৭৮৫৫ জন, মেখল ২১৭১৩ জন, চিকনদন্ডি ৩২৮৪৪ জন, নাঙ্গলমোড়া ৫৩৮১ জন, ছিপাতলী ৬৫৫৭ জন, বুড়িশ্চর ৩১৭১৬ জন, শিকারপুর ৩২২৪৯ জন, ধলই ২৮৩২ জন, ফরহাদাবাদ ২১৫৫৩ জন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন