বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে মহাসড়কের ১৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
যাত্রীরা এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন। মঙ্গলবার সকালে রূপগঞ্জের বরপা এলাকার অন্তিম নিটিং ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ও অন্তিম নিট কম্পোজিট নামে পোশাক কারখানার সামনে ঘটে এ ঘটনা।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, বরপা এলাকার ওই পোশাক কারখানায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এ কারখানায় গার্মেন্টস সেকশন, নিটিং সেকশন, ডাইং সেকশন ও প্রিন্টিং সেকশন রয়েছে। এর মধ্যে নিটিং সেকশন, ডাইং সেকশন ও প্রিন্টিং সেকশনে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
প্রতি মাসের ৮-১০ তারিখের মধ্যে সব সেকশনের বেতনভাতা পরিশোধ করার কথা থাকলেও গত মাসে শুধু গার্মেন্টস সেকশনে বেতনভাতা পরিশোধ করেছে মালিকপক্ষ।
এ ছাড়া নিটিং সেকশন, ডাইং সেকশন ও প্রিন্টিং সেকশনের বেতনভাতা পরিশোধ করেনি। এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই শ্রমিকরা মালিকপক্ষের কাছে তাদের বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে আসছেন। মালিকপক্ষ দেই-দিচ্ছি করে কালক্ষেপণ করছে।
শুধু তাই নয়, বেতনভাতা পরিশোধ না করে গত শনিবার ও রোববার ওই তিন সেকশনের শ্রমিকদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। সোমবার বেতনভাতা পরিশোধ করার আশ্বাস দিলেও তা পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ।
বকেয়া বেতনের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে কারখানার সামনে অবস্থান করেন শ্রমিকরা। এ সময় গার্মেন্টস সেকশনের শ্রমিকদেরও কারখানায় প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়।
পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধের ফলে সড়কের উভয় দিকে শত শত ছোটবড় যানবাহন আটকা পড়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
এতে অ্যাম্বুলেন্সও আটকা পড়ে। ভোগান্তির শিকার হয়ে অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেন।
খবর পেয়ে জেলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসপি জাহিদুল ইসলাম ও এএসপি জিনিয়ার নেতৃত্বে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের একটি দল মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে।
পরে কারখানার পরিচালক দেলোয়ার হোসেনসহ মালিকপক্ষ মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে বেতনভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা শর্তসাপেক্ষে অবরোধ তুলে নেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, তারা অতিরিক্ত টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে এবং বাকিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে কাজ করে আসছেন।
মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বাসা ভাড়ার টাকা ও মুদি দোকানদারদের টাকা পরিশোধের জন্য তাদের অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করা হয়। বেতনভাতা না পেয়ে তাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন।
জেলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসপি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মালিকপক্ষ কথা দিয়েছেন আজ মঙ্গলবারের মধ্যে বেতনভাতা পরিশোধ করবেন।
মন্তব্য করুন