নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্প নগরীতে একটি রপ্তানিমূখী পোশাক কারখানায় জাকিউল ইসলাম নামের এক কর্মচারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে কৃর্তপক্ষের দাবি তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে শ্রমিকরা সহকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্দ হয়ে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। এবং বেশ কয়েকটি কারখানায় ব্যাপক ভাংচুর চালায়। শ্রমিকরা প্রায় দুই ঘন্টা বিসিকে বিক্ষোভ করে ইট পাটকেল ছুঁড়ে। এতে অন্তত ১০জন শ্রমিক আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানায়, সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত ফেইম এ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি রপ্তনিমূখী পোশাক কারখানার সুপারভাইজার সামিউল বুধবার সকাল ৮টায় কাজে যোগদান করেন। সকাল ১০টায় ডিউটি চলাকালীন সময়ে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ অবস্থায় তাকে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ খবর কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানায় বিক্ষোভ শুরু করে ভাংচুর চালায়। পরে এ বিক্ষোভ পুরো বিসিক শিল্প নগরীতে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিপূরণের দাবীতে এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিসিকের প্রধান তিনটি ফটক বন্ধ করে দিয়ে ৭-৮টি পোশাক কারখানায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর চালায়। কারখানার বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে বাইরে এনে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। শ্রমিকদের নিক্ষিপ্ত ইট পাটকেলে বিভিন্ন কারখানার দশজন শ্রমিক আহত হয়। আহতদের নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ৩শ’ শয্যাবিশিষ্ট হসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি দেখে বেলা ১টায় বিসিক এলাকায় সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধ ঘোষণা দেয়ার পরও ভাঙ্গচুর অব্যাহত রাখে শ্রমিকরা। ভাঙ্গচুর চলাকালীন গণমাধ্যমকর্মীরা ভাঙ্গচুরের চিত্র ধারণ করতে গেলে অল্প বয়সী কিছু শ্রমিক তাদের উপর আক্রমনাত্মক আচরণ করে। শ্রমিকরা তাদের ঘেরাও করে এবং সকল ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র ডিলিট করতে বাধ্য করে।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যে স্থানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিক জাকির মারা যায় সে স্থানটিকে কিছু সমস্যা ছিল। এ সম্পর্কে একাধিকবার মালিকপক্ষকে জানানোর পরও তারা এর কোনো সমাধান করেন নি। যার ফল সরূপ শ্রমিক জাকির মারা যায়। মূলতে এ কারণেই শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি বিক্ষিব্ধু হয়ে পরে।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ মো: মঞ্জুর কাদের জানান, কারখানার মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করে নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতি পূরণের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা শান্ত হয়। বিসিকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন