দুটি চাঁদাবাজির ও একটি চুরির মামলার পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার জমি দখল ও হত্যার হুমকির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় পৃথক ৪ মামলা দায়ের করা হলো। এর মধ্যে ৩ মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। মালায় ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে আশুলিয়ার নলাম এলাকার বাসিন্দা হাজী মো. এফাজ উদ্দিনের পুত্র মো. নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা (নং-৬৮) দায়ের করেন। মামলায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাষ্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির ও গণবিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি রেজিস্ট্রার গোলাম মর্তুজা আলী বাবুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে হুকুমের আসামী করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ‘গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’ এবং ‘গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড’ কারখানায় অভিযান চালিয়ে নানা অনিয়ম, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ও লাইসেন্স নবায়ন না থাকায় ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন এবং এন্টিবায়োটিক বিভাগ সিলগালা করে দিয়েছেন।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ মামলার বরাত দিয়ে জানান, আশুলিয়ায় বাঁশবাড়ী মৌজায় ১৬ শতাংশ জমি মামলার বাদী ও তার ভাই আবু বকর সোহেল ক্রয়সূত্রে মালিক। বিএস রেকর্ডেও তাদের নাম রয়েছে। ২০১২ সালে ৩ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে গণস্বাস্থ্য’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহর হুকুমে অন্য আসামীরা জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে ১৩.২৫ শতাংশ জমি দখল করে নেয়। খবর পেয়ে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে দখলকারীরা খুন জখমের হুমকি দেয়। এমনকি পরবর্তীতে জমিতে গেলে হত্যা করে লাশ জমিতে দাফনের হুমকি দেয়। তিনি আরও বলেন, এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে দখলকারীরা জমিতে থাকা ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের গাছ কেটে ফেলে এবং এক লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি টিনসেড ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যায়। দখলকারীরা ওই জমিতে পিএসসি ভবনের গেইট নির্মাণ করেন। বাদী উল্লেখ করেছেন, জাফরুল্লাহর সহযোগিরা ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী তাই তাদের ভয়ে তিনি এতদিন মামলা করতে সাহস পাননি।
প্রসঙ্গত: এর আগে গত রোববার রাতে আশুলিয়া থানায় বেআইনী জনতাবদ্ধ হয়ে অনধিকার প্রবেশ, চুরি, ভাংচুর, ক্ষয়ক্ষতি ও হুমকির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সৈয়দ সেলিম আহমেদ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামীরা হলেন, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেলোয়ার হোসেন ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুস সালাম।
১৫ অক্টোবর রাতে কোটি টাকা চাঁদাবাজীর অভিযোগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার দেলোয়ার হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির, ও জমি বেচাকেনার মধ্যস্থ্যতাকারী আওলাদ হোসেনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার খামারহাটি গ্রামের মোহাম্মদ আলী। ১৯ অক্টোবর এক কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে আবারও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন স্থানীয় মো. হাসান ইমাম নামে জনৈক ব্যক্তি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন