ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সুযোগ নেই। নাগরিকদের যানমালের নিরাপত্তা দেওয়া তাদের দায়িত্ব। কেউ বিশৃঙ্খলা করলে পার পাবে না। সব ধরণের বিশৃঙ্খলা এবং সহিংসতা প্রতিরোধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কমিশনার আরও বলেন, নগরীতে যানজট নিয়ন্ত্রণে এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে তৃতীয়বারের মতো (২৪ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত) বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করা হবে। এতে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ২১৬ জন রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে।
কমিশনার বলেন, ঢাকা শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সর্বকালের চেয়ে ভালো রয়েছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতাসহ এ ধরণের অপরাধ কঠোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থানে থাকায় সেটাও নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু শতচেষ্টা করেও যানজট ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারছি না। এর কারণ ট্রাফিক সপ্তাহ চলা অবস্থায় আইন মানলেও এরপর আর মানছে না।
তিনি বলেন, নগরীতে ১৩০টি বাস স্টপেজ ও ৫৪টি চেকপোস্ট রয়েছে। চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা জানেন তাদের কেমন আচরণ করতে হবে। তারা অনেক সচেতন। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পেশাদার মনোভাব অনেক বেড়েছে। তবে অপেশাদার আচরণ করলে শাস্তির ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। আগে যেখানে প্রতিদিনই অভিযোগ পাওয়া যেত, এখন মাসেও একটা পাওয়া যায় না।
চেকপোস্টে নারী হেনস্তার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, পুলিশের এক সদস্য ভালো হবে এমন ধারণা নিয়ে ওই ভিডিও ধারণ করে এবং তা ফেসবুকে ছাড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসিকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কারো অপেশাদার আচরণ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএমপি প্রধান আরো বলেন, ৫-১৪ আগস্ট ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করি। সে সময় বিভিন্ন যানবাহন থেকে ৬ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এরপর ৫-৩০ সেপ্টেম্বর মাসব্যাপি ট্রাফিক সচেতনতা পালন হয়। সেখানেও বিভিন্ন যানবাহন থেকে ১৪ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আইন না মানার প্রবণতা এবং নিজেদের সচেতন না হওয়ার কারণেই ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যায়নি।
ট্রাফিক শৃঙ্খলা সপ্তাহের মূল কাজ হবে ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করা, বাস নিয়ন্ত্রণ, যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ ও নির্ধারিত বাস স্টপিজগুলোতে যাতে বাসগুলো থামে সে ব্যবস্থা করা। গাড়ির কাগজপত্র ঠিক রাখুন, চুক্তিভিত্তিক গাড়ি যেন না দেয়া হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হয়ে ট্রাফিক আইন মেনে চলি, অন্যকে মানতে উদ্বুদ্ধ করি। আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে ট্রাফিক আইনের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি। যার কারণে অনেক উন্নতি হয়েছে। এই উন্নতিকে স্থায়ী করতে লিফলেট বিতরণ, পোস্টার ও ফেস্টুন লাগানোসহ বিভিন্ন সচেতনামূলক কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন