প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আইনের শাসন ছাড়া গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের তিন অঙ্গের সমন্বিত প্রয়াসই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সংবিধানে বিচার বিভাগকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক বিচারককে বিচার কাজে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিচারক এবং একই সাথে আইনজীবীদের ভূমিকাই প্রধান। ক্রমবর্ধমান দেশের জনসংখ্যা ও মামলার সংখ্যা অনুসারে বর্তমানে দেশে বিচারকের সংখ্যা অপর্যাপ্ত। বিচারক বাড়ানো দরকার। বিচারপ্রার্থীদের কষ্ট ও দুর্ভোগ লাগব করার জন্য বিচারকদের আরো যতœবান হবেন এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বেঞ্চ ও বারের পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও জ্ঞানের চর্চা করার মানসিকতা অপরিহার্য বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা জজকোর্টের জেলা আইনজীবী সমিতি (বার) মিলনায়তনে সংবর্ধিত অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। কুমিল্লার কৃতিসন্তান ও কুমিল্লা বারের সাবেক সদস্য হিসেবে দেশের ২২তম বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে জেলা আইনজীবী সমিতি সংবর্ধনা দেয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি বলেন, মান সম্মত বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বদ্ধ পরিকর। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র একে অপরের পরিপূরক। বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আজকে গণতন্ত্রকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র চলছে। মন্ত্রী কুমিল্লা বারের অবকাঠামো ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এক কোটি টাকা অনুদান ঘোষনাসহ কুমিল্লায় শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন।
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা বিভাগের প্ল্যান হয়ে গেছে। কুমিল্লার নামেই বিভাগের নামকরণ করা হবে। কিছু কারণে বিভাগ ঘোষণা করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে কথা দিলাম কুমিল্লার নামেই বিভাগ হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বত্তৃতায় কুমিল্লা সদর আসনের এমপি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একুশ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে কাজ শুরু হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যের জেলা কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। অনুষ্ঠানে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ কে.এম সামছুল আলম কুমিল্লার আদালতের বিচার ব্যবস্থার ইতিবাচক বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক ও সুপ্রীমকোর্টের জেনারেল রেজিস্ট্রার ড. জাকির হোসেন। কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল হাসেম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ইসমাইল, সৈয়দ আবদুল্লাহ পিন্টু, জহিরুল ইসলাম সেলিম, কাজী নাসমুস সাদাত এবং বর্তমান সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, আবদুল মমিন ফেরদৌস ও সিনিয়র আইনজীবী ইউনুস ভূইয়া। এদিকে সকাল ১১টায় প্রধান বিচারপতি ফিতা কেটে ও পায়রা উড়িয়ে কুমিল্লা জজকোর্ট প্রাঙ্গণে নব নির্মিত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন