শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

পোস্তগোলায় চীন-মৈত্রী সেতুতে টোল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত অর্ধশতাধিক

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:২৬ পিএম | আপডেট : ২:৩০ পিএম, ২৬ অক্টোবর, ২০১৮

ছবি-এস এ মাসুম


রাজধানীর শ্যামপুর থানার কাছেই পোস্তগোলায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোল নিয়ে বিক্ষোভরত পরিবহন শ্রমিকদের উপর পুলিশ গুলিবর্ষন করলে একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও কয়েকজন। নিহত সোহেল (২৮) মহেন্দ্র গাড়ির চালক। পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা আরও বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। থেমে থেমে সংঘর্ষ চলতে থাকে। পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হয়। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিকরা এই ঘটনার জন্য টোলের ঠিকাদারকে দায়ী করেছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ইজারাদার ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে সকালে প্রথমে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলা করায়। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পোস্তগোলায় প্রথম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোলের হার নিয়ে অসন্তুষ্ট পরিবহন শ্রমিকরা শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ শুরু করলে টোলের ঠিকাদারের ভাড়াটে শ্রমিকরা তাদের উপর হামলা করে। এতে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ সেখানে যায় । এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শ্রমিকরা। শ্রমিকরা সেতুর কেরানীগঞ্জ প্রান্তে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ছে থাকে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রবার বুলেট ছোড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সংঘর্ষস্থল থেকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ একজনকে কাছের ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের নাম সোহেল (২৮)। মহে›ন্দ্র গাড়ির চালক সোহেল পুলিশের গুলিতে নিহত হন বলে পরিবহন শ্রমিকরা জানান।
হাসপাতালটির ম্যানেজার কারিমুল হাসান বলেন, গুলিবিদ্ধ একজনের লাশ আমাদের এখানে এসেছিল। তার বুকের নিচে ও পেটের উপরে গুলির জখম ছিল। পুলিশ এসে লাশটি নিয়ে গেছে। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বলেন, আমি একজন নিহত হওয়ার খবর শুনেছি। খোঁজ নিচ্ছি, ঘটনাটি পুরোপুরি জানলে নিশ্চিত করতে পারব।
সংঘর্ষে শ্রমিক-পুলিশ মিলিয়ে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। পুলিশের গাড়িও ভাংচুর হয়েছে। বহু শ্রমিককে পুলিশ আটক করেছে বলেও বিক্ষোভকারীদের দাবি।
শ্রমিকরা জানান, এই সেতুতে আগে ট্রাকের টোল ছিল ৩০ টাকা। গত ২২ অক্টোবর সেই টোল বাড়িয়ে করা হয় ২৪০ টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি টোল বাড়ানোয় তারা বিপাকে পড়েছেন।। শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, মুন্সীগঞ্জ জেলা সড়ক বিভাগকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে টোলের অঙ্ক বাড়িয়ে নিয়েছে টোলের ইজারাদার।

এই টোল কমিয়ে আনার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করেছিলেন পরিবহন শ্রমিকরা; শুক্রবার তা সহিংস রূপ নিল।
এই পরিস্থিতিতে সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক। এতে করে যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
গত কয়েক দিন ধরেই টোল কমানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিকরা। এ ছাড়া ট্রাক শ্রমিকরাও টোলমুক্ত সেতুর দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
বুড়িগঙ্গা নদীর উপর এই সেতুর টোল বাড়ানোর প্রতিবাদে ২০১৫ সালে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভে তিন দিন যান চলাচল বন্ধ ছিল।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন