তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারে প্রথম শ্রেনির বন্দির মর্যাদা দিতে করা আবেদনের ওপর গতকাল রোববার হাইকোর্টে শুনানি হয়েছে। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ (সোমবার) আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। মইনুল হোসেনের সহধর্মিনী সাজু হোসেনের করা এক আবেদনের ওপর শুনানিশেষে আদালত আদেশের দিন ধার্য করেন।
আদালতে মইনুল হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান। শুনানিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকে যে মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে সেটা জামিনযোগ্য। তারপরও তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সাবেক সংসদ সদস্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের মালিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে। এই মানিক মিয়া বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারাগারে ছিলেন। তার নামে মানিক মিয়া এভিনিউ করা হয়েছে। অথচ তাকে কারাগারে ডিভিশন না দিয়ে সাধারণ কয়েদির সঙ্গে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মইনুল হোসেনের জন্য কেন ডিভিশন চেয়ে আবদেন করতে হবে? রাষ্ট্র নিজে থেকেইতো ডিভিশন দেবে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য। বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে আজ মানিক মিয়ার ছেলেকে ডিভিশনের জন্য আবেদন করতে হচ্ছে। এ সময় আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়ে বলেন, মি. ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। এটা কি হচ্ছে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে কি আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হবে? জেলার (তত্বাবধায়ক) কোন এখতিয়ার বলে বলেন যে তাকে সাধারণ হাজতীদের সঙ্গে রাখা হবে?
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে উপস্থিত হয়ে বলেন, আইন অনুযায়ী বিচারিক হাকিম আদালত এ বিষয়ে আদেশ দেবেন। সরাসরি হাইকোর্টে আসার সুযোগ নেই। এছাড়া হাকিম আদালতের কোনো আদেশের কপি এখানে নেই। তাই এটা অসম্পূর্ন আবেদন। এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ঢাকার হাকিম আদালতের আদেশের পর আমরা রংপুর আদালতে ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো লিখিত আদেশ দেয়নি ওই আদালত। ফলে এখানে তা দিতে পারিনি। এসময় আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জানতে চান, মইনুল হোসেনকে ডিভিশন দেওয়া যায় কিনা? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইন অনুযায়ী বিষয়টি দেখবে বিচারিক আদালত।
এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন, উচ্চ পর্যায় থেকে বলা হলো, মামলা করেন। আমরা দেখবো। এটা বলার পরই দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক মামলা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ১৮টি মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, আমরাতো তার জামিন চাচ্ছি না। আমাদের আবেদন ডিভিশনের জন্য। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন