দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে অর্থবহ সংলাপের দাবি জানিয়ে আসছিলেন কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অহঙ্কার বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। এই সংলাপের ব্যাপারে সরকার শুরু থেকেই একেবারে অনড় অবস্থায় থাকার কারণে সরকারকে সংলাপে বসার কঠিন শর্ত এবং আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি মতিঝিলে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি এই দাবিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ৩০৮ দিন এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছিলেন।
অবশেষে দীর্ঘ দিন পর গতকাল একেবারেই অপ্রত্যাশিত এবং নাটকীয়ভাবে সরকার ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে মূলত প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সাথে সংলাপে বসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। গতকাল রাতে এ ব্যাপারে দৈনিক ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি মনে করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদকালে এ পর্যন্ত যত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন; তার মধ্যে সবচাইতে উত্তম এবং সেরা সিদ্ধান্তটি তিনি নিয়েছেন গতকাল এই সংলাপে বসার সিদ্ধান্তটি নিয়ে। এটাই হচ্ছে প্রকৃত নেতার প্রকৃত কাজ। রাজনীতি করবেন, অথচ সংলাপে বসবেন না; এটা তো কোনো সভ্য সমাজেই কাম্য হতে পারে না। অনেক বিলম্বে হলেও সরকারের এই শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা বলে- এখন এই সংলাপ সফল করতে হলে এবং দেশকে সম্ভ্যাব্য বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সবচাইতে বেশি ইতিবাচক ভ‚মিকা পালন করতে হবে সরকারকেই। আমি আরো মনে করি, শুধু সংলাপের সফলতার জন্যই নয়, আগামী দিনের রাজনীতির সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন বর্তমানে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়াকেও তার রাজনৈতিক গুরুত্ব অনুযায়ী তার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাতে হবে। সরকারকে বুঝতে হবে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের ইচ্ছার বিপক্ষে গিয়ে কখনো কল্যাণধর্মী রাজনীতিও করা যায় না; সরকারও পরিচালনা করা যায় না। এ ক্ষেত্রে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয়ে অনুরোধ করব- তিনি যাতে তার মন্ত্রিসভায় ঘাঁপটি মেরে থাকা কিছু গণবিরোধী তথাকথিত নেতার ব্যাপারে সতর্ক থাকেন। আমি মনে করি, সংলাপে বসার এই সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও জনমনে আগামী দিনের রাজনীতি নিয়ে যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা রয়েছে তা প্রশমিত করবে।
যদি এই সংলাপ সফল হয় এবং সংলাপের সফলতায় দেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা যায় তাহলে নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি উপকার হবে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগেরই। কারণ, গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হলে সেই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কঠিন খেসারত দিতে হয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদেরকেই। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।’
। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপে বসার সম্মতির খবর জানালেন ওবায়দুল কাদের
। ঐক্যফ্রন্ট নেতাকে ওবায়দুল কাদেরের ফোন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন