বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শ্রমিকের মজুরী বেশি হওয়ায় বাম্পার ফলনেও হতাশ গফরগাঁওয়ের কৃষক

প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. আতিকুল্লাহ, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) থেকে
গফরগাঁও উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে বোরো ধান কাটা ধুম পড়েছে। তবে সর্বত্র কৃষিশ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ধান কাটতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার বাম্পার ফলন হয়ে থাকলেও ধানের দর কম থাকায় কৃষকের মুখে হাসি নেই। অপরদিকে কৃষি শ্রমিকের মূল্য খুবই চড়া। দৈনিক তিন বেলা খাবার দিয়ে ও ৪শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিক। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এতে করে নির্ধারিত সময়ে ধান কেটে ঘরে আনা সম্ভব হবে না। উপজেলা কৃষি অফিসার এস এস ফারহানা হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৫১০ হেক্টর। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে বিদ্যুতের মাধ্যমে আবাদ হয়েছে। এবারে কৃষকদের মধ্যে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। একবার গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে ফলন ভাল হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূেেল থাকার ফলে ইরি-বোরো ফসল ভাল হয়েছে। ফলে কৃষকরা এখন আধাপাকা ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু এলাকায়  কালবৈশাখী বাতাসে কিছুটা পাকা ধান পড়ে গেছে। ধান ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। একমণ ধান উৎপাদন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, তাও উঠবে না। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গফরগাঁও সালটিয়া, দত্তেরবাজার, কান্দিপাড়া সহ বিভিন্ন হাট-বাজারে নতুন ধান উঠলে ও বেচা-কেনা খুবই কম। চিকন ধান প্রতিমণ ৪৫০টাকা থকে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা ধান প্রতিমণ ৪শ’ টাকা থেকে ৪৫০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গফরগাঁও উপজেলা সদর শিবগঞ্জ রোডের চালের ব্যবসায়ী মো. ফারুক জানান, নতুন চিকন চাল (৫০) কেজী প্রতিবস্তায় ২৮ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪শ’ টাকা থেকে এক হাজার ৫শ’ টাকা। নতুন মোটা চাল ৫০ কেজি প্রতিবস্তায় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৩শ’ টাকা। রাওনা ইউনিয়নের খারুয়া বড়াইল  গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু জানান, বড় আশা নিয়ে বোরো ফসল করে ছিলাম। কিন্তু বোরো ধানের দাম এক দম পড়ে গেছে। অথচ এ ফসল করতে প্রচুর টাকা ব্যয় হয়েছে। বোরো ফসল করতে যে টাকা খরচ করেছি তা উঠবে না। ফলে আগামীতে অনেকেই বোরো ফসল করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সার বেশি দামে কিনে দিয়ে ছিল। তার পরে আবার বেশি দামে মজুরী দিয়ে ধান রোপণসহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্চা করা হয়। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষিশ্রমিকের অভাবে ধান কাটা যাচ্ছে না। শ্রমিকের অভাবের কারণ হচ্ছে যে, অনেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে কর্মস্থানে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ বিদেশে চলে গেছে। এক সময়ে গফরগাঁও রেল স্টেশনে বিভিন্নস্থান থেকে শত শত শ্রমিক আসতো কৃষি কাজ করার জন্য। কিন্তু কালের বিবর্তনের সে দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। দিন বদল পালার সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন