দিদারুল আলম রাজু, খাগড়াছড়ি থেকে
বিটিআরসির নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খাগড়াছড়ি জেলায় বায়োমেট্রিক বা আঙুলের ছাপের মাধ্যমে সিম পুনঃনিবন্ধনে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে অর্থ আদায় করছে রিটেইলার ও ব্র্যান্ড প্রমোটাররা। গ্রাহকভেদে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে বেশির ভাগ রিটেইলার। আর কোম্পানি নিয়োজিত ভ্রাম্যমাণ ব্র্যান্ড প্রমোটররা আদায় করছেন ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। গত কয়েক দিনে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও কয়েকটি উপজেলা ঘুরে এমন অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিম পুনঃ নিবন্ধনে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বিধিনিষেধ থাকলেও তা মানছেন না তারা। আর কোনো গ্রাহক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কিংবা প্রতিবাদ জানালে তাকে কাস্টমার কেয়ারে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অপারেটর কর্তৃক নিয়োজিত ব্র্যান্ড প্রমোটরদের বিরুদ্ধেও টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসানুল করিম অভিযোগ করে বলেন, সিম নিবন্ধনের জন্য তার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়েছেন খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে রবি নিয়োজিত ব্রান্ড প্রমোটররা। একই অভিযোগ করেছেন খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মৌমিতা ত্রিপুরাসহ আরও অনেকে। রবির খাগড়াছড়ি এরিয়ার ম্যানেজার মাহমুদ-উল-আলম বলেন, রিটেইলারদের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়ার পর তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি সিম নিবন্ধনে ব্র্যান্ড প্রমোটরদের কোম্পানি হতে সাত টাকা করে কমিশন দেয়া হচ্ছে, গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকার নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদি কোনো প্রমোটরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টেলিটকের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি এরিয়ার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার সুভাশীষ তালুকদার বলেন, অর্থ আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে জেলার মাটিরাঙ্গা, তবলছড়ি ও পানছড়ির তিনজন রিটেইলারের কাছ থেকে ডিভাইস নিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে তাদেরও ক্লোজড করা হবে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন। এদিকে নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হওয়ার দিন যত ঘনিয়ে আসছে কাস্টমার কেয়ার, রিটেইলার ও প্রমোটরদের কাছে গ্রাহকদের ভিড় ততই বাড়ছে। শেষ সময়ে এসে গ্রাহকদের চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। তবে খাগড়াছড়ি জেলায় রবির প্রায় আড়াই লাখ সক্রিয় গ্রাহক, টেলিটকের ১ লাখ ১৫ হাজার গ্রাহকসহ গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল ও সিটিসেল মিলিয়ে মোট পাঁচ লক্ষাধিক সক্রিয় গ্রাহক থাকলেও সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখনও প্রায় অর্ধেকের বেশি গ্রাহকের সিম পুনঃনিবন্ধন করা হয়নি। বাকি কয়েক দিনে শতভাগ নিবন্ধন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তারা। আর এর জন্য নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন