শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

আশাশুনিতে আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫ শতাধিক পরিবারের এখনো ওয়াপদার বাঁধে বসবাস

প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে
আইলার ৮ বছর অতিবাহিত হলেও আশাশুনির পাঁচ শতাধিক গৃহহীন মানুষ এখনো গৃহ সংস্থান করতে পারেনি। ফলে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়ি বাঁধ ও বাঁধের পাশে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আইলার ছোবলে ১১টি ইউনিয়নের মানুষ কমবেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অনেকে তাদের বাসগৃহে কোন রকমে কিংবা মানানসই জায়গা করে নিতে পারলেও প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৫ শতাধিক পরিবার আজও গৃহহীন রয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়িবাঁধের উপর তারা মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ সৃজনের মাধ্যমে বাস্তহারাদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া দু’বছর যাবত চালু হলেও তাদের ভাগ্যে অবহেলার ভূত চেপে বসেছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্য স্থান চরভরাটি ১৫ একর জমি দখলে রেখেছে এক ভূমিদস্যু। ২০০৯ সালের জলোচ্ছ্বাস আইলায় উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা, তেলিখালি, সুভদ্রাকাটি ও রুইয়ারবিলের ৫ শতাধিক পরিবার কপোতাক্ষ নদ ভাঙনে গৃহহীন হয়ে পড়ে। এরমধ্যে অনেক পরিবার এলাকা ছেড়ে বিভিন্নস্থানে বসবাস করছে। আর অধিকাংশ পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে ওয়াপদার স্লোবে বসবাস করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে নদী ভাঙনে ভূমিহীন পরিবারকে আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসনের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। বাস্তহারা মানুষ আবার আশায় বুক বাঁধতে শুরু করে। সে মোতাবেক ১৫৮নং চাকলা-তেলেখালি মৌজার এসএ-১নং খাস খতিয়ানের ১১৬ ও ৯৩০ দাগের ১৫ একর চরভরাটি সম্পত্তির উপর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ সৃজনের মাধ্যমে এসব গৃহহীন পরিবারগুলির পুনর্বাসন করার সম্ভাব্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়। জেলা প্রশাসকের (এসএশাখা) কার্যালয় হতে ৩১.৪৪.৮৭০০. ০০৬.০৩.০০৬.১৬- ২৭৪ নং স্মারকে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ২৮/১২/১৫ তারিখে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ সৃজন করে ২০১০ সালের ৬৬০ নং স্মারকের নীতিমালা/নির্দেশিকা অনুসরণ করে প্রস্তাব প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু উক্ত ভূমিতে আগে থেকেই লবনচাষ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত সাপেক্ষে সেখানকার বাস্তব অবস্থা জানার জন্য সার্ভেয়ার মাহমুদুল আলমকে প্রেরন করেন। তিনি সরেজমিন তদন্ত করে জানান, উক্ত সম্পত্তিতে বর্তমানে কোন লবণ প্রকল্প নেই। সেখানে স্থানীয় ভূমিহীনরা একসনা ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করে যাচ্ছেন। উক্ত সম্পত্তি ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনা করে সেখানে আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করা যায় বলে তিনি মনে করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সে মোতাবেক জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু একই দপ্তরে ভূমি কর্মকর্তারা একটি বিপরীতমুখি প্রতিবেদন দাখিল করলে আশ্রয়ন প্রকল্পটির কাজ মূলত থেমে গেছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, উক্ত ১৫ একর সরকারি সম্পত্তি এলাকার ভূমি দস্যু সোহরাব হোসেন বিভিন্ন লোকের নাম দিয়ে মূলত একাই তিনি ভোগদখলে রেখেছেন। গৃহহীন ৫ শতাধিক অসহায় পরিবারগুলোর মানবেতর অবস্থা বিবেচনা করে আশ্রয়ন প্রকল্পে তাদের পুনর্বাসনের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন