শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

আগাম ইরি-বোরো কাটা মাড়াই শুরু

বাম্পার ফলনেও খরচ না ওঠার আশঙ্কায় ফুলবাড়ীর কৃষক

প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. আবু শহীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে আগাম ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে এখন ধানের শীষের সোনালী রঙের বর্ণিল ছোঁটার সমারোহ। যতদূর চোখ যায় শুধু সোনালী রঙের চোখ ধাঁধাঁনো দৃশ্য। মাঠজুড়ে সোনালী রঙ বলে দিচ্ছে গ্রাম বাংলার কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ইরি-বোরো ধান চাষের সফলতা আসন্ন। চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের বুকভরা আশা করছে এই এলাকার কৃষককূল। গত ইরি-বোরো মৌসুমের প্রাকৃতিক ধকল কেটে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করায় এবং কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন পর্যন্ত হানা না দেয়ায় এই উপজেলায় ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ১৩ হাজার ৩শ’ ৭০ হেক্টর (৩৩০২৩ একর) জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৩ হাজার ৫শ’ ৭০ হেক্টর (৩৩৫১৮ একর) জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ২শ’ হেক্টর বেশি। এদিকে কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, একর প্রতি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৯ মণ নির্ধারণ করা হলেও কৃষকরা প্রতি একরে ৬০ মণ ধান উৎপাদন করছেন বলে জানা যায়। কিন্তু এতেও কৃষকের উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে জানিয়েছেন চিন্তামণ গ্রামের কৃষক এজাজুল ইসলাম ও একই গ্রামের কৃষক সুলতান বারী। তারা বলেন, ৬০ মণ ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ১৮ হাজার টাকা, কিন্তু ধান উৎপাদনে সার, বীজ, সেচ, নিড়ানি, চাষসহ কৃষকের সর্বসাকূল্যে খরচ, একর প্রতি ২৪ হাজার ৩শ’ টাকা। এক্ষেত্রে কৃষকরা প্রতি একরে ৬ হাজার ৩শ’ টাকা লোকসান গুণছেন। আবার বর্গাচাষি কৃষক জমি মালিকদের ইজারার টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দ্বিগুণ লোকসানের শিকার হচ্ছেন। এতকিছুর পরেও কৃষিজীবী মানুষের মাঝে এখন ধান-কাটা মাড়াইয়ের উৎসব শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হামিম আশরাফ জানান, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে বোরো ক্ষেতে কঞ্চি ও গাছের ডাল পুঁতে বিকল্প উপায়ে পোকা-মাকড় নিধনে কৃষকদের উৎসাহ প্রদান, সময়মত পোকা দমনের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ এবং মাঠ পর্যায়ে ব্লক সুপারভাইজারদের সার্বক্ষণিক তদারকির ফলে উপজেলায় ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু এলাকায় হাইব্রিড জাতের ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে, সকল জাতের ধান কৃষকের ঘরে উঠতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। এ সময় পর্যন্তু কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এই এলাকার কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের কাক্সিক্ষত ফলন পাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন