রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় পিকআপ চাপায় দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম তুহিন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গত শনিবার রাতেই তুহিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে রোববার তাকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন মঞ্জুর করেন।
ঘটনায় নিহত আরিফ হোসেনের বাবা ওমর ফারুকের দায়ের করা একটি মামলায় (নং-৪৯) তুহিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে এখনও আতংক রয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের বলেন, যে দু’জন মারা গেছেন তারা আমার দল আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী। তাদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করলো তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের নাম না নিয়ে তিনি বলেন, আমি তো আর কারো নাম বলতে পারি না। কার লোক মেরেছে। তবে ওই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে ১২/১৪ জন। তারা সবাই বলেছে, যুবলীগের তুহিনের নেতৃত্বে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা হয়। আর তুহিন কার লোক সেটা সবাই জানে।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেন, নিহত আরিফের বাবা ওমর ফারুক একটি হত্যা মালা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৪৯। ফৌজদারি আইনের ৩০৪ ধারায় (বেপরোয়া যান চালনায় মৃত্যু) দায়ের করা ওই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আমরা ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আরও কারা জড়িত রয়েছে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
আদাবর ৩০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান মিয়া বলেন, আদাবর থানা যুবলীগের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম তুহিনের নের্তৃত্বে হামলা হয়েছিল। আর তিনি নানক ভাইয়ের অনুসারী।
গত ১০ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর আদাবর নবোদয় হাউজিং লোহার গেট এলাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় মধ্যে পিকআপ ভ্যান চাপায় আরিফ হোসেন ও মো. সুজনসহ ১৪/১৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে পৃথক হাসপাতালে নেবার পর মারা যায় আরিফ হোসেন ও মো. সুজন। দুইজন নিহতের ঘটনায় নিহত দুজন ও আহতরা সবাই সাদেক খানের সমর্থক বলে জানা গেছে। ওই ঘটনায় আদাবর থানা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক পলাশ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুশফিক, সবুজ, মাসুদ, নজরুল ইসলাম, ৩০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলু, আনোয়ার হোসেন, ইদ্রিস ও হালিমসহ ১২/১৪ জনের অবস্থা গুরুতর। নিহত সুজন নবীনগর হাউজিংয়ের ১০ নম্বর রোডে থাকে। পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে সে। তার বাবার নাম রুহুল আমিন। অন্যদিকে নিহত আরিফ প্রিন্টিংয়ের কাজ করে। তার বাবার নাম মো. ওমর ফারুক। ভোলা জেলার লালমোহনে গ্রামের বাড়ি। ঢাকার তুরাগ হাউজিংয়ের ঢাকা উদ্যান পানির পাম্পের পাশে তার বাসা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন