মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে
টেকনাফ পৌরসভা নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকার মাঝি হলেন বর্তমান মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলাম এবং বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মো. জাবেদকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। গত সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার/পৌর মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মেয়র প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করে দলটি। গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে টেকনাফ পৌরসভা নির্বাচনে হাজী মোহাম্মদ ইসলামের নাম জানানো হয়। এদিকে টেকনাফ উপজেলা ও পৌর বিএনপির এক মতবিনিময় ও প্রার্থী বাছাইয়ের সভায় দলের দায়িত্বরত কোনো যোগ্য প্রার্থী না থাকায় উপস্থিত সবার সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি সমর্থক মো. জাবেদকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। অথচ পৌরবাসী তাকে চেনেন না। আগামী ২৫ মে টেকনাফ পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন পাওয়ার খবর পেয়ে মেয়র প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা আগাম প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে যার মতো কৌশলে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত। দলীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান বাদ দিচ্ছেন না কোনটিই। প্রতিটি অনুষ্ঠানেই নিয়মিত অংশ নিয়ে চালাচ্ছেন গণসংযোগ। দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এতে করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পৌরসভার মেয়র প্রার্থীরা। ঝাড়া দিয়ে উঠেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও, ফলে ঝিমিয়ে থাকা রাজনৈতিক অঙ্গনে মুুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনের উত্তাপ। এ নির্বাচনে সরকারি দলের প্রেস্টিজ ইস্যু এবং বিরোধী দল সমূহের টিকে থাকা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ। বর্তমানে টেকনাফে চায়ের দোকান থেকে অফিস ও পাবলিক প্রেসে বইছে নির্বাচনের হাওয়া। মেয়র প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে টেকনাফের চায়ের দোকান, হোটেল-রেস্তরাঁয় আর জনসমাগম স্থলগুলোতেও চলছে সরগরম আলোচনা। প্রার্থীরা কে কোন মতও পথের কে মেয়র হলে কি করবেন আলোচনা উঠে আসছে এসব বিষয়। প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে এখন থেকেই তাদের প্রার্থীতার খবর জানিয়ে দিচ্ছেন। নিচ্ছেন দোয়া ও আশীর্বাদ। তাদের সমর্থক ও শুভাকাক্সিক্ষদের মাধ্যমে চালাচ্ছেন তাদের ভোট জরিপও। ভোটারদের সমর্থন আদায়ে করছেন ঘরোয়া বৈঠক। সেখানে থাকছেন তাদের আত্মীয়স্বজন, সমর্থক ও কর্মীরা। তাদের মতামত নিয়ে ঠিক করা হচ্ছে ভোটের আগাম পরিকল্পনা। প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লার ছোটবড় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সবার সহযোগিতা ও দোয়া চাইছেন। এসব অনুষ্ঠানে নগর উন্নয়নে নিজেদের নানা পরিকল্পনার বিষয়টি তুলে ধরে সকলের দৃষ্টি আর্কষণ করা চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখন থেকেই রুটিন করে প্রার্থীরা একেক পাড়া ও মহল্লার মসজিদে একেক দিন জুমার নামাজ আদায় করে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। আর সেখানে নিজেদের প্রার্থীতার বিষয়টি জানিয়ে তাদের দোয়া নিচ্ছেন। করছেন চা চক্র আর মতবিনিময় সভার আয়োজন। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভা ২০০০ সালে স্থাপিত হয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাড়েনি কোনো নতুন করে আয়তন। পৌর এলাকাগুলোতে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা না পৌঁছায়ে যেন এখনও গ্রামের মতো। যে কারণে পৌরসভা এলাকার ভোট নিয়ে প্রার্থীরা বেশ চিন্তিত। এবারের নির্বাচনে মেয়র হওয়া বেজায় ‘টাফ’ এমন মন্তব্য অধিকাংশ প্রার্থীর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন