সউদী আরবের রাজতন্ত্র-বিরোধী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেশটির যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানই দিয়েছেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র তদন্তে এ তথ্যই উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভারশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গতমাসে সউদী কনস্যুলেটে ব্যক্তিগত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হন সউদী সরকারের কঠোর সমালোচক খাসোগি।
ওয়াশিংটন পোস্ট গত শুক্রবার সংশ্লিষ্ট অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সিআইএ’র তদন্তে মোহাম্মাদ বিন সালমানই খাসোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা বলে প্রমাণিত হয়েছে। নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমেরিকায় বসবাসরত খাসোগি ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সউদী আরবের কাছে ১১ হাজার কোটি ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির স্বার্থে খাসোগি হত্যায় সউদী যুবরাজের হাত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে এতদিন যেসব বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন, সিআইএ’র এই মূল্যায়নের পর তা আর সম্ভব হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে খাসোগি হত্যার জন্য সউদী যুবরাজকে দায়ী করা হয়নি।
দৈনিকটি আরও জানিয়েছে, সিআইএ যেসব তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের ছোট ভাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সউদী রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের সঙ্গে খাসোগির টেলিফোনালাপ।
ওই ফোনালাপে খালিদ খাসোগিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গিয়ে সউদী কনস্যুলেট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে বলেন এবং তার কোনো ক্ষতি হবে না বলে নিশ্চয়তা দেন। কিন্তু খাসোগি সেখানে গিয়ে নিহত হন এবং এর দু’দিন পরই খালিদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে তড়িঘড়ি করে সউদী আরবে ফিরে যান। তাকে আর ওয়াশিংটনে ফেরত না পাঠিয়ে অন্য কাউকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট আরো জানিয়েছে, খাসোগি হত্যাকান্ডের পরপরই ইস্তাম্বুলের সউদী কনস্যুলেট থেকে করা একটি ফোনকলও আমলে নিয়েছে সিআইএ। ওই ফোনকলে খাসোগি হত্যাকান্ডের ঘাতক দলের সদস্য মাহের মুতরেব জানান, অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন