প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গতকাল শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ পরীক্ষা শুরু হয়। সারা দেশ থেকে মোট ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন পরীক্ষার্থী এতে অংশ নিয়েছে। তারমধ্যে প্রথম দিনে গতকাল রোববার অনুপস্থিত ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার ১৬৮ জন পরীক্ষার্থী। অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৫৩ জন ও ইবতেদায়ি সমাপনীতে ৪২ হাজার ৪১৫ জন। গতকাল ৭ হাজার ৪১০টি কেন্দ্রে ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এবারের পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাদ দেওয়া হয়েছে। ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে ১০০ নম্বর করে মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭ লাখ ৭৭ হাজার ২৭০ জন প্রাথমিকের এবং ইবতেদায়ি শিক্ষার ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮৫৩ জন । এ বছর ৭ হাজার ৪১০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ১২টি কেন্দ্র বিদেশে অবস্থিত।
বরিশাল : বরিশাল জেলার ১৬২টি কেন্দ্রে প্রাথমিক এবং ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৫৩ হাজার ৫৫ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৫৬টি কেন্দ্রে অংশ নিচ্ছে ৪৭ হাজার ৫৮০ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছেলে ২১ হাজার ৩৬৭ জন এবং মেয়ে ২৬ হাজার ৬৪ জন। বরিশালের ৬টি কেন্দ্রে অংশ নিচ্ছে ৫ হাজার ৪৭৫জন ইবতেদায়ী পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়ে ২ হাজার ৩১১ জন এবং ছেলে ৩ হাজার ৩৩২ জন। গতকাল পরীক্ষা শুরুর পরপরই বরিশাল জিলা স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। এ সময় কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
ফেনী : প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রথম দিন রোববার ফেনীতে শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল ৫শ ৬৫ শিক্ষার্থী। ফেনীর ৬টি উপজেলায় এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো ২৪ হাজার ৫১৪ জন পরীক্ষার্থীর। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় গতকাল রোববার প্রথম দিন ইংরেজি বিষয়ে ৯৭জন পরীক্ষার্থী অনুপুস্থিত । এছাড়া ইফতেদায়ী পরিক্ষায অনুপুস্থিত ৫৩জন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাঃ হাসিনা ভূঁইয়া বলেন, উপজেলা ১০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এই বছর ৩৪৩০ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায ফর্ম পুরণ করেছে। এর মধ্যে গতকাল রোববার প্রথম দিনে ইংরেজি বিষয়ে ৯৭জন পরিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেননি। এছাড়া ইফতেদায়ী পরীক্ষায় ২৪৯ জন পরীক্ষাথীর মধ্যে ৫৩জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : মীরসরাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম রহমান চৌধুরী জানান মীরসরাই উপজেলার ১৮ টি কেন্দ্রে ৭৩৭৮ শিক্ষার্থী উক্ত পিএসসি ও ইবতেদায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মীরসরাই উপজেলার সকল কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
রামগড় (খাগড়াছড়ি) : খাগড়াছড়ি রামগড় উপজেলায় প্রাথমিক ও এবতেদায়ী সহ সর্বমোট-১৫১৫জন পরীক্ষার্থী মধ্যে প্রথম দিনে অনুপস্থিত রয়েছে ৫১জন। কেন্দ্রের সদস্য সচিব ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নাসির উদ্দিন জানান রামগড় উপজেলায় ১৫১৫ জন পরীক্ষার্থী মধ্যে ৫১ জন পরীক্ষর্থী অনুপস্থিত রয়েছে। এদিকে পরীক্ষা গ্রহন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে ইসরাত কেন্দ্র পরির্দশন কালে এ প্রতিনিধিকে জানান প্রথম দিনের প্রাথমিক ও এবতেদায়ী পরীক্ষা সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে গ্রহন করা হয়েছে।
হিলি : প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রথম দিন ইংরেজি বিষয়ে ১০৬ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান জানান, এ বছর প্রাথমিকে ৫৫ জন ও ইবতেদায়ি শিক্ষায় ৫১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়নি। মোট ১০৬ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।
পরীক্ষা বঞ্চিত ৭ শিক্ষার্থী
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একই বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এরা হলো উপজেলার গোলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসাদুল বিশ্বাস, সজল মৃধা, সাহাদ সরদার ও সাগর মৃধা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বাবুলের খামখেয়ালিপনার কারণে ওই পরিক্ষার্থীরা এ বছর পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বাবুল জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। তবে কেন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলো না জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কছে এর কোন উত্তর দিতে পারেনি ওই শিক্ষক।
ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের গাফলতির কারণে প্রবেশ পত্র না আসায় চলতি প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেনি ৩ শিক্ষার্থী। পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা হল উপজেলার কুমারপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম পলাশ ক্লাস রোল-২৩, একই গ্রামের গনেশ চন্দ্রের মেয়ে শিমু ক্লাস রোল-১২ এবং রতন চন্দ্রের মেয়ে পল্লবী ক্লাস রোল-২৭। তারা উপজেলার চন্দ্রখানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর নিয়মিত শিক্ষার্থী।
পরীক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম পলাশের মা পলি বেগম বলেন , পরীক্ষা দেয়ার জন্য আমার ছেলে ফরম পূরণ করেছে, কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন জানতে পারলাম তার প্রবেশপত্র আসেনি। এটা প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণে হয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম প্রিয়া জানান, তার প্রতিষ্ঠান থেকে ২৭ জন শিক্ষার্থী চলতি পিইসিই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ওই ৩ শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা তাদের নাম পাঠাতে নিষেধ করায় তাদের নাম পাঠানো হয়নি। ফলে তাদের প্রবেশ পত্র আসেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন