শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নিজ দলের বিদ্রোহী ঠেকাতে মরিয়া আ.লীগ-বিএনপি বিশ্বনাথের ৬ ইউনিয়ন

প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মামুনুর রশীদ মামুন, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে
আগামী ৭ মে চতুর্থধাপে অনুষ্ঠিত হবে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৬টিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছিটিয়ে অবিরাম ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের ধারে ধারে। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও প্রধান দুই দল আ.লীগ ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে পুরোপুরি উৎসবমুখর হয়ে ওঠেনি এবারের নির্বাচন। ৬টি ইউনিয়নের সবক’টিতেই রয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং দু’টি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী। আর বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে আ.লীগ-বিএনপি ক্রমশ পড়ছে বিপাকে। অধিকাংশ প্রার্থীর দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে শুরু থেকেই নারাজ রয়েছেন উভয় দলের তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসের পক্ষ থেকে নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। গত শনিবার সিলেটের জেলা প্র্রশাসকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ রায় ব্যক্ত করেছেন। তবে সাধারণ মানুষ, বিএনপি, জামায়াত প্রার্থীদের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র মিলে মোট ২৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, আ.লীগ-বিএনপির দলীয় কোন্দল তথটাই তীব্র আকার ধারণ করছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে ঘায়েল করতে যতটা না কাজ করছেন, তার চেয়ে নিজ দলীয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। অবস্থাদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে- নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা অভ্যন্তরীণ কোন্দল শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। আর এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষরা মনে করছেন। এদিকে ৪টি ইউনিয়নে আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে জেলা আ.লীগের পক্ষ থেকে তাদেরকে বহিষ্কারের কথা গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। বহিষ্কারাদেশের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দলীয় কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ বহিষ্কারাদেশের ফলে সাধারণ ভোটারদের কাছে কয়েকগুণ গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায় বিদ্রোহীদের। অন্যদিকে চশমা প্রতীকে দুই ইউয়িনে বিএনপির দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিদ্রোহী দুই প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় পুরনো কোন্দল আবারও প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। গত শুক্রবার থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করছেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলী পতœী তাহসিনা রুশদির লুনা। গণসংযোগকালে উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা বিএনপি নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নূরউদ্দিন, উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে তার সাথে দেখা যায়নি। যদিও দলীয় মনোনয়ন বাচাই এবং বণ্ঠনকালে উল্লেখিত নেতাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ইলিয়াস আলীর অর্বতমানে দলের এই দুঃসময়ে ইলিয়াস আলীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত নেতারা লুনার সাথে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী। সবমিলিয়ে বর্তমানে প্রধান দুই দলের প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা ও সাধারণ ভোটারদের কাছে গ্রহণ যোগ্যতায় পিছিয়ে রয়েছেন। ফলে নির্বাচনী প্রচারণার চেয়ে আলোচনা সমালোচনাই বেশি হচ্ছে। চারটিতে জাতীয় পার্টি ও তিনটিতে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলেও কর্মীর অভাবে আলোচনায় আসতে পারছেন না দু’দলের প্রার্থীরা। তবে খাজাঞ্চী ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী ও লামাকাজী ইউপিতে জাতীয় পার্টির নেতা একেএম দুলাল নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকার আভাস পাওয়া গেছে। সাধারণ ভোটারদের মতে আ.লীগ ও বিএনপি উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নেই শক্তিশালী এবং গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দিতে পারেনি। ফলে দু’দলের অনেক দুর্বল প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাই নিজ দলের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে প্রচারণার মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন