রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খুলনায় নতুন ভোটারে ‘চ্যালেঞ্জ’ গ্রেফতার দুশ্চিন্তায় বিএনপি

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

খুলনায় ছয়টি আসনে দশ বছরের ব্যবধানে নতুন ভোটার বেড়েছে প্রায় চার লাখ। এই নির্বাচনেই তারা দেবে জীবনের প্রথম ভোট। যে কোনো প্রার্থীর ভাগ্য বদলে দিতে পারে এসব তরুণ ভোটাররা। তাই নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্ব›দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে নতুন ভোটাররা একটি বড় ফ্যাক্টর। তাদের কাছে টানতে মরিয়া দু’দল। তবে এ বিষয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট।
অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ, নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগে দলীয় প্রভাব ও গ্রেফতার ইস্যু নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। গত শনিবার জেলা রিটার্নিং অফিসারকে ৭ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপি। যে কারণে বিএনপির চেয়ে নতুন ভোটার ইস্যুতে কাজ বেশি করার সুযোগ পাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, চার লাখ নতুন ভোটারের অধিকাংশই সুশিক্ষিত। তারা দলীয় প্রভাবের বাইরে থেকে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ভোট দেবে।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে খুলনার ছয়টি আসনে ভোটার ছিল ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৬২ জন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ১৬ লাখ ২ হাজার ৪৯ জন। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার বেড়ে হয়েছে ১৮ লাখ ৮শ’৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ২ হাজার ৮শ’২৯ জন ও নারী ভোটার রয়েছে ৮ লাখ ৯৮ হাজার ১ জন। ফলে দশ বছরের ব্যবধানে নতুন ভোটার বেড়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬৮।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব নতুন ভোটারকে পাশে পেতে রাজনৈতিক দলগুলো নানা কৌশল হাতে নিলেও ভোটারদের নজর ইশতেহারে। কোন রাজনৈতিক দল তরুণদের জন্য কী ভাবছে, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, অবকাঠামো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোন দলের ভূমিকা কী ছিল- এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচনে ভোট দেবে বলে মন্তব্য করেছে নতুন ভোটাররা।
বিএল কলেজের ছাত্রী শিউলী আক্তার উপমা বলেন, এবার জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেব। দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে কোন রাজনৈতিক দল কী করেছে, তরুণদের কর্মসংস্থান ও সাধারণ মানুষ কীভাবে শান্তিতে থাকতে পারবেন সবকিছু বিবেচনায় আনা হবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ছাত্রী কানিজ ফাতেমা তমা মনে করেন, দেশের উন্নয়ন ও দাবি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন এমন প্রার্থীকেই তরুণরা বেছে নেবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শিক্ষা, উন্নয়ন, অবকাঠামো, কর্মসংস্থান- এ ৪ দাবি বিবেচনায় নিয়েছেন নতুন ভোটাররা। তারা দাবি আদায়ে সক্ষম মানুষকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করবে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’র জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, দলীয় প্রার্থীরা যেমন তরুণ ভোটারের দিকে নজর দিয়েছে। তিনি বলেন, নতুন ভোটারদের অধিকাংশই সুশিক্ষিত। নতুন এই প্রজন্ম দলীয় প্রভাবের বাইরে থেকেই ভোট দেবে। এতে এবারের নির্বাচন হবে তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ। আর তরুণরাই জয়-পরাজয়ের বড় ফ্যাক্টর হয়ে দেখা দেবে।
অপরদিকে, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে খুলনা বিএনপিতে রয়েছে উদ্বেগ। জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে বিএনপি মিথ্যা ও গায়েবি ১৯ মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১৫৯ জন নেতাকর্মীর মুক্তির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। একই সাথে সরকারি দলের নির্বাচনী সভা, যানবাহনে প্রার্থীর পোস্টার, সিটি করপোরেশনের গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সরকারি দলের সমর্থক দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নির্বাচনী কাজে খুলনা মহানগরীতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসি ও অস্ত্রধারীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে নির্বাচনে নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া বিগত মেয়র নির্বাচনে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা বিতর্কিত প্রিজাইডিং ও পুলিশ অফিসারদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন