বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সাফল্যের নজির ধর্ম মন্ত্রণালয়ে

সরকারের এক বছর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণও দিয়েছেন। এ সময়ে কিছু মন্ত্রণালয়ের কাজে মন্থরগতি এবং কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকান্ড নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিলেও কয়েকটি মন্ত্রণালয় বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের ক্যারিশমায় যে মন্ত্রণালয়গুলোতে সাফল্য অর্জিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় অন্যতম। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে বিবদমান দুটি গ্রুপের সমঝোতা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দুর্নীতি বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়নে মাষ্টাপ্লান গ্রহণ, বিভিন্ন ধারায় বিভক্ত আলেম ওলামা এবং ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। হিন্দু- বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ের উন্নয়ন এবং ধর্মীয় উৎসব পালনের সহায়তার মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ধর্মমন্ত্রণালয় মসজিদ কেন্দ্রিক গণশিক্ষা কার্যক্রমে সাফল্য এনেছেন। হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তনসহ বিভিন্ন খাতে পরিচ্ছন্নতা ও গতি এসেছে। শেখ মো. আব্দুল্লাহর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই হজ ব্যবস্থাপনাকে উন্নততর করায় প্রশংসা পেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে ১৪৪০ হিজরীর হজে সুষ্ঠু ও সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় সউদী সরকার বাংলাদেশের ভূয়ষী প্রশংসা করেছে। ১৪৪১ হিজরীর দ্বিপাক্ষি হজ চুক্তিতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর জোরালো প্রচেষ্টায় সউদী সরকার বাংলাদেশের হজযাত্রী কোটা অতিরিক্ত ১০ হাজার বৃদ্ধি করেছে।

সূত্র জানায়, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বলিষ্ঠ উদ্যোগে সুন্দর ও সফল হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে হজ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি বার্ষিক কর্ম পরিকল্পনা তথা হজ ক্যালেন্ডার ২০১৯ প্রস্তুত করে হজ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। বাংলাদেশ এবং সউদী আরব দু দেশেই সুষ্ঠু ও সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় গত হজে হজযাত্রীদের শুধু বিমানভাড়া বাবদ ১০ হাজার ১ শত ৯০ টাকা পর্যন্ত কমানো সম্ভব হয়েছে।

গত ফেব্রæয়ারি মাসে রাজকীয় সউদী সরকারের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক এ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সউদী আরব সফরের সফরকালে বাংলাদেশের বর্তমান মুসলিম জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রাপ্য অতিরিক্ত ২০ হাজার হজযাত্রীর কোটা বৃদ্ধি, সউদী আরবের বিমানবন্দরে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের অপেক্ষার সময় ও কষ্ট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সউদী আরবের পরিবর্তে বাংলাদেশেই প্রি এরাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা করার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে হজের সময় মিনায় অবস্থানকালে হজযাত্রীদের দ্বিতল খাট ব্যবহারে বাধ্য না করা, উন্নত খাবার পরিবেশন, প্রতিটি হজ এজেন্সীর সর্বনিম্ন হজযাত্রীর সংখ্যা ১৫০ থেকে ১০০ তে কমিয়ে আনা এবং পবিত্র হজের দিনগুলোতে বাংলাদেশী হজযাত্রীদের জন্য মক্কা, মিনা, আরাফা, মুযদালেফায় যাতায়াতের সুবিধার্থে পুরোনো বাসের পরিবর্তে উন্নতমানের নতুন ও পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস সরবরাহের অনুরোধ জানান। এর প্রেক্ষিতে সউদী সরকার বাংলাদেশী হজযাত্রীর প্রায় সবগুলো দাবি মেনে নেয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সউদী আরবের জেদ্দা বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশনের জন্য বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ৬ থেকে ৭ ঘন্টা অপেক্ষার সময় ও কষ্ট লাগব করতে সক্ষম হয়েছে। প্রথম বছরেই অত্যন্ত সফলতার সাথে বাংলাদেশের ৬১ হাজার ৫৯০ জন হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন ঢাকায়ই সম্পন্ন করা হয়েছে। হজের সফরে কষ্টকর বিষয় হলো হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহন। লাগেজ পরিবহনের কষ্ট লাঘবের উদ্দেশ্যে রুট টু মক্কা কার্যক্রমের আওতায় হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহন করা হয়েছে। ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে লাগেজ সরাসরি হজযাত্রীর মক্কাস্থ হোটেলের কক্ষে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের সুবিধার্থে হাজীক্যাম্পের ইমিগ্রেশন পয়েন্ট, মসজিদ ও মহিলা হজযাত্রীদের ডরমেটিরতে এসি স্থাপন করা হয়েছে।

সরকারের সাথে দূরত্ব কমিয়ে আনা এবং সরকার যাতে ইসলামের পক্ষে বেশি বেশি কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ কওমী, আলিয়াসহ সকল ঘরানার আলেম ওলামাদের সাথে সুসর্ম্পক গড়ে তোলেন। গত বছরের হজে হজযাত্রীদের সঠিক নিয়মে হজ পালন ও ধর্মীয় বিধিবিধান বিষয়ে পরামর্শ, দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য সারাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা মাশায়েখদের সমন্বয়ে ৫৮ সদস্য বিশিষ্ট টিমকে পবিত্র হজে পাঠানো হয় ।

এছাড়া গত বছর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে বিবদমান দুটি গ্রæপের মধ্যে সমঝোতার সৃষ্টিতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার বলিষ্ঠ পদক্ষের কারণে গত বছর উভয় গ্রæপই সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে শান্তিপূর্ণভাবে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।

দীর্ঘ দিন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। জাতীয় মসজিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং বিশ্বমানের একটি মসজিদ গড়ে তুলতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী একটি মাষ্টার প্লান হাতে নিয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দুর্নীতি অনিয়ম বন্ধ করতেও তিনি বাস্তবমুখী উদ্যোগ নিয়েছেন। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পালন করছেন।

জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর আল্লাহর রহমতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় যা ভাল মনে করেছি তাই করেছি। মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি এবং সাফল্য কতটুকু হয়েছে তা মূল্যায়ন করবে মানুষ। তবে ভ্রাতৃপ্রতিম সউদী আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পক আরো গাঢ় হয়েছে। নেত্রী আমাকে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি উন্নয়নের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সেক্টরে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব। সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিন নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। আগামী ১৪৪১ হিজরীর হজ কার্যক্রম আরো সুন্দর ও ভালো করার জন্য সকলকে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচষ্টা চালাবো ইনশাআল্লাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন