জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার আগামী ১৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা সব নিজ নিজ এলাকায় চলে যাবেন এ জন্য ১০ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়েছে। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণায় চলে যাবেন। এ জন্য আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১০ তারিখ যে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল তা স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে এ সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করে পরে জানানো হবে।
ঐক্যফ্রন্টের আসন বন্টন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ বিষয়ে আপনাদের আগেও বলেছি, আসন বন্টনের বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। এ বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পথে। দু’একদিনের মধ্যে আমরা সব কিছু ফাইনাল করতে পারবো।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেন, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরীম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। এর আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি এটাও আশা করি যে, ন্যায়বিচার যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হবেন, বিবেচিত হবেন। তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তারা দলের অসংখ্য নেতাকে নির্বাচনের অযোগ্য করেছিলেন। আপিলে তাদের অনেকেই বৈধ হয়েছেন। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই। এথেকে আরেকটি বিষয় প্রমাণিত হয়, কমিশন যে সমস্ত কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেখানে প্রার্থী ন্যায়বিচার পাননি।
শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াকে বিজয় হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বরাবরই যে কথা বলে আসছি, সরকারি কর্মকর্তারা যে সরকার দায়িত্বে থাকে, তাদের কথা বেশিরভাগ সময় মেনে চলতে হয়। সে কারণে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ন্যায়বিচার করা সম্ভব হয় না। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে অবৈধ হলেও শুনানিতে অনেকেই প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন এটা একটি বিজয়। যদি ইসি নিরপেক্ষভাবে বিচার করে, খালেদা জিয়া যদি ন্যায়বিচার পান তাহলে তিনিও প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। একইভাবে বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নষ্ট করার জন্য প্রশাসন যুক্ত হচ্ছে। আমরা আবারও নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে গ্রেফতার বন্ধে কমিশনের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে ভীত হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বে-আইনিভাবে প্রভাবিত করছে সরকার। গ্রেফতার না করার প্রতিশ্রæতি দিলেও এখনও বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলে দলে কোন্দল দেখা দেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমি উনার বক্তব্যের জবাব সাধারণত দিতে চাই না। তিনি বলেছিলেন, বিএনপি প্রার্থী দিতে পারবে না, সংকটে পড়বে। আমরা সাড়ে ৮ শ প্রার্থী দিয়েছি। তিনি বললেন, বিএনপি ভেঙে সবাই আওয়ামী লীগে যোগ দেবে। এখনও কেউ যায়নি। তারা ভয় পাচ্ছে বলেই এসব বলছে। তার কথা ও কাজের সাথে মিলছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন