আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে
‘কয়দিন ধরে ঘুরছি। কিন্তু সাব রেজিস্ট্রার না থাকায় প্রতিদিন ফিরে যেতে হয়। এভাবে কয়দিন ঘুরতে হবে জানি না।’ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসে সাব-রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য থাকায় এভাবেই হয়রানির বর্ণনা দিচ্ছিলেন আজিজুল ইসলাম নামে এক জমি ক্রেতা। শুধু আশাশুনি উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিস নয়, জেলার সাতটি উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসেই একই অবস্থা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার কলারোয়া, কালিগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসে সাব-রেজিস্ট্রারের পদ শূন্য রয়েছে। এতে শুধু এই তিনটি উপজেলা নয়, অন্য চারটি উপজেলায়ও রেজিস্ট্রি অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। সাতক্ষীরা জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা রোব, সোম ও মঙ্গলবার সাতক্ষীরা এবং বুধবার গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও বৃহস্পতিবার একই জেলার মোকছেদপুর রেজিস্ট্রি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এতে সময় মতো কোন অফিসেই পৌঁছুতে পারেন না তিনি। রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাতক্ষীরা অফিসে পৌঁছান তিনি। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রেজিস্ট্রি অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। এছাড়া মাত্র তিন দিন কার্যক্রম চলায় ফাইলের পর ফাইল বাড়ছে কর্মকর্তার টেবিলে। তালা উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার গোলাম এলাহী রোব, সোম ও মঙ্গলবার তালা অফিস এবং বুধ ও বৃহস্পতিবার আশাশুনি উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। শ্যামনগর উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার রবিউল ইসলাম রোব, সোম ও মঙ্গলবার শ্যামনগর এবং বুধ ও বৃহস্পতিবার কালিগঞ্জে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। দেবহাটা উপজেলা রেজিস্ট্রি অফিসের সাব রেজিস্ট্রিার নারায়ন ম-ল মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দেবহাটা এবং রোব ও সোমবার কলারোয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। জেলার তিনটি উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার পদ শূন্য থাকায় সেসব জায়গায় জনভোগান্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি যেসব উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার আছেন এবং অন্য উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে যান সেসব উপজেলায়ও স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দলিল লেখক ও নকলনবিসরা এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রারকে বারবার বললেও কোন কাজ হয় না। ফলে ভোগান্তি বাড়ছেই। এদিকে, সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ পরিবহন মন্ত্রীর ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি একটি প্রাইভেট রিজার্ভ করে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে তিন দিনের জন্য সাতক্ষীরায় আসেন এবং মন্ত্রীর পরিচয় দিয়ে সকলের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। টাকা ছাড়া কোন কাজে হাত দেন না। অন্যদিকে, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেও নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন ২০০৯ সালের ৭ ডিসেম্বর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন