আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার দুটি আসনের ধানের শীষের প্রার্থীরা কারাগার থেকেই নির্বাচনে লড়ছেন। এরা হলেন, সাতক্ষীরা ২ (সদর) আসনের মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক ও শ্যামনগর ৪ (কালিগঞ্জের একাংশ ও শ্যামনগর) আসনের গাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের গাজী নজরুল ইসলাম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। একাধিক নাশকতার মামলায় এই দুই প্রার্থী কারাগারে আটক রয়েছেন।
প্রচার রয়েছে সাতক্ষীরার মাটি জামায়াত- বিএনপি’র ঘাটি। এরপরও এই ঘাটিতে হানা দিয়ে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি একাধিকবার নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়েছেন। এমনকি ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরা ৩ আসনের জামায়াতের প্রার্থী এ, এম রিয়াছাত আলীকে হারিয়ে আওয়ামীলীগের ডাঃ আ, ফ, ম রুহুল হক নির্বাচিত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। তার আমলেই সাতক্ষীরায় একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়।
২০১৪ নির্বাচনে সাতক্ষীরার চারটি আসনে আওয়ামীলীগ ও তাদের জোটের প্রর্থীরা নির্বাচিত হন। এবারের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সাতক্ষীরার চারটি আসনে জামায়াত বিএনপিকে হারিয়ে জয়লাভ করতে চায় আওয়ামীলীগ। আর আসনগুলো পুনুরুদ্ধার করতে চান ধানের শীষের প্রর্থীরা। তবে, নৌকার জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল ও বিকল্পধারার কুলা প্রতীকের প্রার্থীরা। দিনে দিনে ভোটের সংখ্যা বাড়ছে এবং নির্বাচনে জয়লাভ করবেন, এমনটিই আশা এসব দলীয় প্রার্থীদের।
নৌকার প্রার্থীদের পাশাপাশি সাতক্ষীরা ১ আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত. ২ আসনে জাতীয় পার্টির মাতলুব হাসেন লিয়ন, সাতক্ষীরা ৪ আসনে জাতীয় পার্টির আব্দুস সাত্তার মোড়ল ও বিকল্পধারার প্রার্থীর জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এইচ, এম গোলাম রেজা ভালো অবস্থানে রয়েছেন। ৩ আসনে জাতীয় পার্টি বা বিকল্পধারার কোন প্রার্থী না থাকায় এই আসনে মূলতঃ প্রতিদ্বন্দিতা হবে সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের ডাঃ আ, ফ, রুহুল হক ও বিএনপি’র ধানের শীষের প্রতীকের বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শহিদুল আলম। দু’জনেই রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। যদিও প্রচার প্রচারণায় নৌকার প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। এ চিত্র শুধু তিন আসনে নয়, সাতক্ষীরার চারটি আসনেই প্রচারে এগিয়ে নৌকার প্রার্থীরা। মাঠে ময়দানে সবখানেতেই নৌকা। নৌকার পোষ্টারে ছেয়ে গেছে গোটা জেলা। অন্যদিকে, কোথাও কোনো পোষ্টার নেই ধানের শীষের। এমনকি প্রার্থীদের কোথাও দেখা মেলে না। অতি গোপনে তারা তাদের প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। একেবারে নিরব হয়ে পড়েছেন কারাগারে থাকা ১ ও ৪ আসনের প্রার্থীর নেতা-কর্মীরা। তাদের পক্ষে কোন প্রচার প্রচারণা নেই বললেই চলে। গ্রেফতার, হামলা-মামলার ভয়ে ধানের শীষের বহু নেতা-কর্মী এলাকা ছাড়া হয়েছেন বলে প্রার্থীদের নিকটতমদের কাছ থেকে জানা গেছে। তারা জানান, পোষ্টার ব্যানার ও প্রচার-প্রচারণা না থাকলেও নিরব ভোট বিল্পবের মাধ্যমে চারটি আসনেই ধানের শীষের অ-সম বিজয় হবে।
এদিকে, নির্বাচনের তারিখ যতোই এগিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে উদ্বেগ- উৎকন্ঠা। সাধারণ ভোটারদের মাঝে শংকা, ভোট শান্তিপূর্ণ হবে তো ? একটাই প্রশ্ন, কেন্দ্রে যেয়ে নির্বিঘ্নে আমার ভোট আমি দিতে পারবো তো ?
আমিনুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম, আমেনা বেগমসহ সাতক্ষীরার একাধিক ভোটার জানান, আমাদের গর্ব, দেশের অহংকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছেন। গৌরব উজ্জল সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষ ভুমিকা এবং সহযোগিতায় সাতক্ষীরার মানুষ নিরাপদে, নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে যেয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন, এমনটিই আশা করছেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন