বাংলাদেশের ৬৬ টি উপজেলায় বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন হয়েছে। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের এক মাত্র সিরাজদিখান উপজেলায় ৩৭৩ টি বায়োগ্যাস প্লাণ্ট স্থাপন হয়েছে। গ্রামীণ জনপদে জীবনযাত্রার ধরনে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। আর এ ক্ষেত্রে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস প্লান্ট। যা একদিকে যেমন পচনশীল দ্রব্য ও পশু বর্জ্যে জৈব সার তৈরি করে জমিতে ছিটালে জমির উর্বরতার পাশাপাশি জমির ফলন বৃদ্ধি পায়। তেমনি রান্নায় জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দূষণমুক্ত পরিবেশ ধরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। বায়োগ্যাসের কল্যাণে রান্নার কাজে গৃহিণীরা থাকছেন স্বাস্থ্যঝুঁকি মুক্ত। সেই সাথে প্লান্ট স্থাপনের জন্য এলাকাবাসী ঝুঁকছেন ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারের দিকে।
সিরাজদিখান উপজেলার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ইমপ্যাক্ট প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে ২০১৪/১৫ সাল অর্থবছরে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন শুরু হয়। প্রথম বছরে ১০ টি পরিবার প্লান্ট পায়। পর্যাক্রমে এরা ব্যবহার বাড়তে থাকে । বর্তমানে সিরাজদিখানে ৩৭৩ টি প্লাণ্ট স্থাপন করা হয়েছে । প্রতিটি প্লান্ট হতে তিন থেকে পাঁচটি পরিবার সংযোগ নিতে পারবে। বাড়িতে তিনটি দেশি বা একটি বিদেশি গরু থাকলেই যে কেউ বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করতে পারেন। এছাড়া পোল্ট্রি খামারের মুরগির বর্জ্য থেকেও প্লান্ট স্থাপন করা যায়। এ জন্য বিনামূল্যে কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি প্রতিটি প্লান্ট স্থাপনে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়। সেই সাথে সহজ শর্তে ৪০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ব্যবস্থা আছে বলে সিরাজদিখান উপজেলার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় ।
উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে এসব বায়োগ্যাস প্লান্ট ব্যবহার দেখা গেছে।
বায়োগ্যাস প্লাণ্টের উপকার পেয়েছেন এমন একজন নারী লতব্দী ইউনিয়নের দক্ষিন লতব্দী গ্রামের শিলা ঘোষ (২৬) জানান, তিনি গরুর খামারের বর্জ্য দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেছেন। যা থেকে নিজে গ্যাস ব্যবহার করছেন এবং আর চারটি সংযোগ দিয়েছেন।
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ডলি রাণী নাগ বলেন, সারাদেশে ৬৬ টি উপজেলায় বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলার মধ্যে এক মাত্র সিরাজদিখান উপজেলায় ৩৭৩ টি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন হয়েছে । নারী পুরুষ ৪৩৫ জনকে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ২২ লক্ষ৭০ হাজার টাকা বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে লক্ষ্যে ঋণ প্রধাণ করা হয়ছে। একটি ছোট পরিবারের রান্নার জন্য একটি ছোট প্লান্ট যথেষ্ট। এতে ওই পরিবারের জ্বালানি স্বাশ্রয়ের পাশাপাশি গৃহিণীর শরীরও ভালো থাকে। বায়োগ্যাস ব্যবহারে মানুষকে সামাজিকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন