রংপুর বিভাগের ৮ জেলার প্রায় প্রতিটি স্থান থেকেই সৈয়দপুরে আসছে বিভিন্ন জাতের কুল। ক্রেতা বিক্রেতারা দর কষাকশি করে কুল ক্রয় করছেন এবং বাছাই করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন নীলফামারী জেলার প্রতিটি উপজেলা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। প্রায় ১০/১২টি আড়ত নিয়ে জমে উঠেছে সৈয়দপুরের কুলের বাজার।
কুল আড়তদার ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন বর্তমান মৌসুমে এই অঞ্চলের কৃষকরা প্রতিযোগিতামূলক কুল আবাদে ঝুকে পড়ে। এ যাবত ৭০ লাখেরও বেশি টাকার কুল কেনাবেচা করেছেন। আগামী মার্চ, এপ্রিল মাস পর্যন্ত আরও প্রায় ১ কোটি টাকারও বেশি কুল কেনাবেচা হতে পারে ।
সৈয়দপুর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে ১নং রেলঘুমটির ৫০ গজ দক্ষিণে রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় কুলের আড়ত। এসব আড়তে সিদ্দিক নামের এক ফল ব্যবসায়ী জানান, রংপুর বিভাগের প্রায় সব জেলা থেকেই বাগান মালিকরা আপেল কুল, বাউকুল সহ থাই কুল উৎপাদন করে নিয়ে আসছেন সৈয়দপুরে। পাইকাররা কুল ক্রয় করছেন এবং বাছাই করার পর প্যাকেট করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন উত্তরাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
ফারুক ও বাদশা নামের আড়তদার জানান, মান অনুসারে ১ মণ কুল কেনাবেচা হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল জানান, দীর্ঘদিন থেকে এ অঞ্চলের কৃষকদের কুল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছিল এর ফলে তারা গত দু’বছর থেকে কুল গাছ লাগাতে শুরু করে। তিনি জানান, প্রথম ২ বছর লাভের অংক কম গুনলেও এ মৌসুমে আসা অনুযায়ী ফলন সহ কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায় আগামী মৌসুমে কৃষকরা কুল চাষে বেশি ঝুকে পড়বেন এবং আগামীতে ২ কোটি টাকারও বেশি কুল কেনাবেচা হতে পারে বলে তিনি ইনকিলাবকে জানান।
উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাগান মালিক আবু সাঈদ জানান, তিনি তার ৪ বিঘা জমিতে আপেল কুল ও বাউকুলের চাষাবাদ করেন প্রায় ২ বছর আগে। ওই জমিতে এবারের প্রথম কুল উৎপাদন করে এ যাবত ২ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন এবং তার লাগানো গাছে আরও প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের কুল রয়েছে বলে জানান তিনি। কুল বাগান মালিক মফিজ উদ্দিন জানান, দীর্ঘ বছর থেকে তিনি তার জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে আসছিলেন কিন্তু নিম্নমানের বীজ, সার, কীটনাশক সহ বীজের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আবাদী ফসলের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় লাভের চেয়ে লোকসানের অঙ্কই বেশি গুনতে হয়েছিল। এবারেই প্রথম উৎপাদিত কুল বিক্রি করে মোটামুটি লাভের মুখ দেখতে পেরেছেন।
উপজেলার চেয়ারম্যান মোকছেদুল মোমিন জানান, সরকার কৃষকদের কুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ সহ সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে এ অঞ্চলের প্রতিটি কৃষকই স্বাবলম্বী হতে পারত। ঘুচে যেত অভাব অনাটন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন