শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ

শার্শায় রেকর্ড পরিমাণ বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ

বেনাপোল থেকে মহসিন মিলন | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

যশোরের সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলায় চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ দুলছে বাতাসের তালে তালে। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষা ক্ষেত। সরিষার মাঠে ইতোমধ্যে দেখা মিলছে মৌমাছির মধু আহরণের দৃশ্য। গত বছর স্থানীয় বাজারে উন্নত জাতের সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবারও অধিক আগ্রহী হয়েছেন সরিষা চাষে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের ন্যায় এ বছরও অধিক লাভবান হবে কৃষকরা এমনটি মনে করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

শার্শা উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে ১ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর আরও ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ বেশী হচ্ছে। আর কৃষকরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বারি-১৪, বারি-৯, বিনা-৯/১০ ও স্থানীয়ভাবে বারি-৭ হাইল্যান্ড ও সম্পদ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। ফলে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছরের পর বছর স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করে ফলন কম হচ্ছিল। সেই সাথে উৎপাদনে সময় বেশি লাগায় কৃষকরা সরিষা চাষ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। তবে চলতি মৌসুমের শুরুতেই উপজেলা কৃষি বিভাগ ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। এ জাতের সরিষা মাত্র ৭৫ দিনে উৎপাদন করে ঘরে তোলা সম্ভব। প্রতি হেক্টরে এই জাতের ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করাও সম্ভব। এতে বকরে নিশ্চিত হয় কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার।

শার্শা উপজেলার বাইকোলা গ্রামের সরিষা চাষি মামুন বাবু জানান, চলতি বছর দুই বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও বিনা-৯/১০ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি প্রায় ৩-৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।
একই উপজেলার বাগআচড়ার খাটবাড়িয়া গ্রামের কৃষক বাবলুর রহমান বলেন, গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষ করেছি। ফলন ভালো ও দাম পেলে আগামী বছরও সরিষা চাষে এ অঞ্চলের অন্যন্যরাও সরিষা চাষে আগ্রহী হবেন।
বেনাপোলের ছোট আচড়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম কৃষক বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার জমিতে ধানের আবাদ ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, সরিষা চাষে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বারি-১৪সহ অন্যান্য সরিষা বপনের মাত্র ৭৫ দিনের মাথায় ফলন পাওয়া যায়। সরিষা উত্তোলনর পর একই জমিতে ফের বোরো আবাদ করা সম্ভব। সে জন্য এটাকে কৃষকরা ‘লাভের ফসল’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, বারি-১৪ সরিষার গাছ লম্বা হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে পড়ে জৈব সারের কাজ করায় জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদের পর ওই জমিতে বোরো আবাদে সারের পরিমাণ কম লাগে। তাই এ জাতের সরিষা চাষের জন্য আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে থাকি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন