মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মৌলভীবাজারে চলছে মাছের মেলা

মৌলভীবাজার থেকে এস এম উমেদ আলী | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর এলাকায় কুশিয়ারা নদীর পাড়ে প্রায় দুইশত বছর পূর্ব থেকে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা শুরু হয়েছে। ৩ দিন ব্যাপী মেলায় হাওর ও নদীতে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা দেশীয় প্রজাতির টাটকা মাছ কিনতে বিভিন্নস্থান থেকে ক্রেতারা ও পাইকাররা ভীড় জমান। তবে মেলার আয়োজকদের দাবি মেলার জন্য স্থায়ীভাবে যাতে স্থান নির্ধারণ করা হয়।

মৌলভীবাজার, সিলেট ও হবিগঞ্জের সীমানা ঘেষে জেলার শেরপুর এলাকায় বসে প্রতি বছর মাছের মেলা। আর এ অঞ্চলের মানুষ অধীর আগ্রহে থাকেন কখন বছর ঘুরে শুরু হবে মাছের মেলা। এ বছর মেলায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূলের বাঘাইড় মাছ উঠেছে।
পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে মাছের মেলাটি শুরু হলে এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া তিনদিন ব্যাপী এই মেলা শেষ হবে আজ মঙ্গলবার।

মেলা পার্শবর্তী এলাকা আইনপুরের সাবু মিয়া জানান প্রতি বছর মাছের মেলার অপেক্ষায় থাকেন তিনি নদী ও হাওর থেকে আসা টাটকা মাছ ক্রয় করতে। মাছ কিনে তিনি পরিবারের সদস্যদের সাথে আত্মীয়স্বজনদের আমন্ত্রণ করে একসাথে খাবারের আয়োজন করেন মেলা থেকে কিনে আনা মাছ দিয়ে।

মাছ বিক্রেতারা জানান হাওর ও নদীতে স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠা মাছ সাধারণত নিয়ে আসেন এই মেলায়। মেলা উপলক্ষে মাছের চাহিদা কয়েকগুন বেড়ে যাওয়ায় তারা বেশি মূল্য মাছ সংগ্রহ করতে হয় তাদের।
শেরপুর এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম জানান, একটি বাঘাইড় মাছ মেলায় নিয়ে আসেন। ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মূল্য চাচ্ছেন। মৎস্য ব্যবসায়ী জাকির মিয়া বলেন, ১০ লক্ষ টাকার মাছ নিয়ে এসেছেন মেলায়। এগুলো হাওর ও নদী থেকে সংগৃহীত টাটকা মাছ। রাজশাহী থেকে আসা মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার রুই, কাতলা ও ব্রিগেট মাছ নিয়ে এসেছেন এ মাছের মেলায়।
মাছের মেলা অয়োজক কমিমিটির সভাপতি মোঃ অলিউর রহমান জানান, গত ৩ থেকে ৪ বছর ধরে জুয়া সহ যাত্রা ও পুতুল নাচের নামে অশ্লিলতা বন্ধ হয়ে শুধু মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিয্য ফিরে পেয়েছে। এছাড়াও প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব সরকারকে তারা দিলেও মেলার জন্য এখনও স্থায়ী কোন স্থান গড়ে উঠেনি। দীর্ঘদিন থেকে কুশিয়ারা নদীর তীর ঘেসে চলে আসা মেলার স্থানটি ভুমিহীনদের বন্দবস্ত দেয়ায় মেলা সুষ্টু ভাবে পরিচালনা করতে ব্যাঘাত হচ্ছে। তিনি ঐতিয্যবাহী এ মাছের মেলা ঠিকিয়ে রাখার জন্য স্থায়ী ভাবে স্থান নির্ধারনের দাবী করেন।

এটি মাছের মেলা হলেও মাছ ছাড়াও ফার্নিচার, গৃহস্থালী সামগ্রী, খেলনা সামগ্রীসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যের দোকান স্থান পায়। বর্তমানে এই মাছের মেলা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মিলনমেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন