ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়ি গ্রামবাসী দীর্ঘ এক মাস ধরে অদৃশ্য জিন, সাপ আতঙ্কে ভুগছেন। আর এর সুযোগ নিচ্ছেন গ্রামের এক শ্রেণির কবিরাজ। জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ গ্রামের খাদেজা বেগম (৪৫) গাদা থেকে বিচুলি কাড়তে গেলে বিষধর সাপে দংশন করে। সে সময় বাড়ির লোকজন গ্রামের মমতাজ নামে এক কবিরাজের কাছে তাকে নিয়ে যান। চিকিৎসার নামে ঝাড়ফুঁক, হাতচালান করা হয়। অবশেষে মারা যান খাদেজা বেগম। উত্তেজিত হয়ে পড়ে উপস্থিত সকলে। এ সময় কবিরাজ জানান, খাদেজাকে জিন সাপে দংশন করেছে। যে কারণে চিকিৎসা দেয়ার পরও তাকে বাঁচানো গেল না। এরপর গ্রামে অদৃশ্য জিনসাপ আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত ডেফলবাড়ি গ্রামের স্কুলের শিক্ষার্থীসহ দেড় শতাধিক লোকজনকে অদৃশ্য জিনসাপ দংশনের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আর কবিরাজের সদকাহর নামে অর্থ বাণিজ্য করারও অভিযোগ উঠেছে। অদৃশ্য জিনসাপে দংশনের নামে চিকিৎসা নেয়া আব্দুর রহিম জানান, গরমে বাড়ির কাছে বসেছিলাম। উঠতেই শরীরে ঝিমঝিম মাথাঘোরার মতো হলো। গ্রামের মমতাজ কবিরাজের কাছে গেলাম, হাত চালান দিয়ে দেখতে পেল বিষ মাথায় উঠে গেছে। নেয়া হল চিকিৎসা। চিকিৎসার নামে দেয়া হয়েছে ঝাড়ফুঁক, হাতচালান। আর সদকার নামে জনপ্রতি নেয়া হচ্ছে ১১০ টাকা। গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ পর্যন্ত স্কুলের প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীকে কবিরাজ ঝাড়ফুঁক, হাতচালান দিয়ে বিষ নামিয়েছে শুনেছি। এ বিষয়ে কবিরাজ মমতাজের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি তো কারো চিকিৎসা দিতে যাচ্ছি না। সবাই আমার কাছে আসছে। আমার জানা আছে তাই চিকিৎসা দিচ্ছি। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে গ্রামের লোকজনদের সচেতন করে তোলা হবে। সাপে কাটলে বা দংশন করলে কবিরাজের নিকট না গিয়ে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা নেবার পরামর্শ দেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন