সখিপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ৫ম ধাপে সখিপুরের ৬টি ইউনিয়নের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন ৬টি হলো- কাকড়াজান, কালিয়া, বহেড়াতৈল, হাতীবান্ধা, যাদবপুর, বহুরিয়া ইউনিয়ন। এখনো নির্বাচনের সময় না হওয়ায় দাড়িয়াপুর ও গজারিয়া ইউনিয়নের নির্বাচন হচ্ছে না। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভোট দিলে ভোট থাকবে কিনা এ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়া কোনো কোনো ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীগণ ঘোষণা দিয়েছে ভোট যেখানেই দিক বিজয়ী হবে নৌকা। এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ছয়টি ইউনিয়নে আ.লীগ, বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় পার্টি, আ.লীগ বিদ্রোহী, স্বতন্ত্রপ্রার্থীসহ ৩৩ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৬৭ জন সাধারণ সদস্য পদে, ৫১ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৬টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩শ’ ৪৯ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৮১ হাজার ৭শ’ ৬৪ জন, পুরুষ ভোটার ৭৬ হাজার ৫শ’ ৮৫ জন। কেন্দ্রের সংখ্যা ৬২টি, ভোট কক্ষ ৪শ’ ৯০টি। পুরুষ ভোটারের চেয়ে ৫ হাজার ১শ’ ৭৯ জন নারী ভোটার বেশি। ৬টি ইউনিয়নের ৩টিতে আ.লীগের হেভিওয়েট বিদ্রোহী প্রার্থী ছাড়াও একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীরা আ.লীগের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি আ.লীগ প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী ভোটের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও জাতীয় পার্টির কোন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। হাতীবান্ধা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন। এরা হলেন- আ.লীগের মো. গিয়াস উদ্দিন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো. আতাউর রহমান, জাতীয় পার্টির মো. জলিল মিয়া। এ ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সামাদ খানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। অজ্ঞাত কারণে তিনি আপিলও করেননি। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৭ হাজার ২শ’ ৯ জন। কালিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৯ জন। এরা হলেন- আ.লীগের এস এম কামরুল হাসান উরফে হারেজ বিএসসি, বিএনপির লিটন আহমেদ আকাশ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আ. হালিম সরকার লাল, জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. জামাল মিয়া, সাইফুল ইসলাম সাইফ, স্বতন্ত্রপ্রার্থী আ. কাইয়ুম খান, আবুল কাশেম ফজলুল হক, শাহজাহান মিয়া। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৩শ’ ৩৭ জন। বহেড়াতৈল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ জন। এরা হলেন- আ.লীগের সোহেল সরকার, বিএনপির হুমায়ুন কবির, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কামরুজ্জামান, আ.লীগের বিদ্রোহী গোলাম ফেরদৌস, স্বতন্ত্র কামাল হোসেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৯ হাজার ১শ’ ৩৫ জন। বহুরিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ জন। এরা হলেন- আ.লীগের গোলাম কিবরিয়া সেলিম, বিএনপির বিএম বজলুর রহমান ভূঁইয়া, আ.লীগের বিদ্রোহী শ্রী নীরাঞ্জন বিশ্বাস, স্বতন্ত্র তোফাজ্জল হোসেন, নাজমুল হক। এখানে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও জাতীয় পার্টির কোন প্রার্থী নেই। মোট ভোটার ২১ হাজার ৪শ’ ২৫ জন। যাদবপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭ জন। এরা হলেন- আ.লীগের এ কে এম আতিকুর রহমান আতোয়ার, বিএনপির এ কে এম ফজলুল করিম, জাতীয় পার্টির আ. সালাম রানা, আ.লীগের বিদ্রোহী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. খালেক, স্বতন্ত্র বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুর রহমান বাবুল, হাফিজুর রহমান চৌধুরী পলাশ, এস এ শাহীন। এখানে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী নেই। মোট ভোটার ২২ হাজার ৮শ’ ৫২ জন। কাকড়াজান ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন। এরা হলেন- বিএনপির শাহজাহান সাজু, আ.লীগের তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আক্কাস আলী, আ.লীগের বিদ্রোহী মো. দুলাল হোসেন। এখানে জাতীয় পার্টির কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী নেই। মোট ভোটার ২৮ হাজার ৩শ’ ৯১ জন। কোন প্রকার কারচুপির আশ্রয় না নিলে, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ ও ভোটারদের মধ্যে কোন আতঙ্ক না থাকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হলে সখিপুরের ৬টি ইউনিয়নে আ.লীগ প্রার্থীর ভরাডুবি হবে বলে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে কাকড়াজান ইউপি বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান সাজু অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি দিচ্ছে এবং কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিলেও ঘোষণা হবে নৌকা বিজয়ী হয়েছে। এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী ২৮ মে ইউপি নির্বাচনে ভোটারদের আতঙ্কিত না হয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন এবং ভোট অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ হবে ও ভোটারগণ জননেত্রীর নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করবেন- এটাই আমার বিশ্বাস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন