বানারীপাড়া (বরিশাল) উপজেলা সংবাদদাতা
বানারীপাড়ায় সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আঃ জলিল ঘরামীর কাছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বরিশালের এডিসি, ঢাকার আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কর্মকর্তা ও পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকের পরিচয় দিয়ে ২৫ হাজার টাকা চাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আঃ জলিল ঘরামী গত মঙ্গলবার জানান, সকাল ১১টায় তার মোবাইলে ০১৭১১৯৬২৮৭৮৭ নম্বর থেকে নিজেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি জানান, বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকাঠি এলাকার হালিমা বেগম ঢাকায় মারা যাওয়ার পরে তার লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোঃ নাসিম দাফন কাফনের জন্য চেকের মাধ্যমে এক লাখ টাকা দিয়েছেন। আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের এ্যাম্বুলেন্সে এক লাখ টাকার চেকসহ ওই লাশ বানারীপাড়ায় পাঠানো হচ্ছে। এ জন্য আঃ জলিল ঘরামীকে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের এক কর্মকর্তার ০১৮৭২২৩৮০৮ বিকাশ নম্বরে ২৫ হাজার টাকা পাঠাতে বলা হয়। লাশ নিয়ে বানারীপাড়ায় পৌঁছার পরে এক লাখ টাকার চেক ভাঙ্গিয়ে মৃত হালিমার পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ২৫ হাজার টাকা আঃ জলিল ঘরামীকে নিতে বলা হয়। এর কিছুক্ষণ পরে ০১৭৬৪৮৫৪৮৯ নম্বর থেকে আঃ জলিল ঘরামীকে ফোন দিয়ে বরিশালের এডিসি আহসান হাবিব পরিচয় দিয়ে ০১৮৭২২৩৮০৮ নম্বর থেকে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কর্মকর্তা ও অপর একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে লাশের সঙ্গে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক পরিচয় দিয়ে অতিরিক্ত সচিবের মত একই কথা বলে ২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টি যাচাই করার জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আঃ জলিল ঘারামী এক সময়ের বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলীর সাথে কথা বলে জানতে পারেন এটি নেহায়েত প্রতারণা। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলী জানান, সারাদেশে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এভাবে মন্ত্রী ও সচিবসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এদের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য তিনি পরামর্শ দেন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বানারীপাড়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ব্রাহ্মণকাঠি গ্রামের সাইদুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা বেগম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (পিজি হাসপাতালে) মারা গেলে তাকে বানারীপাড়া উপজেলার নাটুয়ারপাড় গ্রামে তার বাবার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রসঙ্গত সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান আঃ জলিল ঘরামীসহ তিন ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের কাছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সর্বহারা পার্টির নেতা মেজর জিয়াউদ্দিন পরিচয় দিয়ে ১২ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে তারা বানারীপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন