নড়াইল একটি কৃষি প্রধান জেলা। এই জেলার চাষিরা আদিকাল থেকেই বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি গমের আবাদ করতেন। এক সময় জেলায় প্রচুর পরিমান গমের উৎপাদন হত। বিভিন্ন কারনে দিন দিন এই গমের আবাদ আশংকা জনক হারে কমে যাচ্ছে। গত চার বছরেই জেলায় গমের আবাদ কমেছে শতকরা ৭৯ ভাগ। উৎপাদন খরচের তুলনায় গমের দাম অনেক কম থাকা, তুলনা মুলক ভাবে গম থেকে ধানের দাম বেশি থাকা, গমে ব্লাষ্ট রোগসহ বিভিন্ন প্রকার রোগ বালায় আক্রমন হওয়ায় গমের আবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে কৃষকদের দাবী।
সদরের তালতলা এলাকার কৃষক রকিম শেখ জানান, এক মন গম উৎপাদন করতে ৬শ থেকে ৭শ টাকা খরচ হয়ে যায়। মৌসুমে বাজারে প্রতি মন গম বিক্রি হয় মাত্র ৬শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকা। সরকারী ভাবেও যথা সময়ে গম কেনা হয়না। এতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দিন দিন গমের আবাদ থেকে সরে আসছে।
কালিয়া উপজেলার বাবরা গ্রামের একাধিক কৃষক জানান, তাদের এলাকায় এক সময় প্রতি ঘরে ঘরে গমের আবাদ করতেন কৃষকেরা। বর্তমানে এলাকাতে তেমন গমের আবাদ হয়না। দিন দিন গমের ফলন কমে যাচ্ছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নড়াইলের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে গমের বীজ বপনের সঠিক সময়। চলতি মৌসুমে নভেম্বর মাসে জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার কারনে সময় মত চাষিরা তাদের জমিতে এবছর গমের বীজ বপন করতে পারেনি। সেই জন্যই চলতি বছরে গমের আবাদ অনেক কম হয়েছে। এছাড়া গমে ব্লাষ্ট রোগের কারনেও গমের আবাদ কমেছে। কৃষকেরা যাতে গম ক্ষেতে এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে সেই জন্য কৃষকদের মাঝে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে গম আবাদের প্রতি উৎসাহ তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। কৃষকদের কথা চিন্তা করে উৎপাদনের সাথে তাল রেখে গমের নায্য মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন