আবুল কালাম আজাদ, বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে
সিলেট-সুনামগঞ্জ-মৌলভীবাজার তিন জেলার সীমান্ত এলাকা বেগমপুর-কাতিয়া সড়কের বেহাল দশা। বিপন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট হওয়ায় তিন জেলাধীন তিন উপজেলা ওসমানীনগর, জগন্নাথপুর ও নবীগঞ্জের লক্ষাধিক মানুষের দুর্গতির সীমা নেই। তিন থানার বিকল্প রাস্তা হচ্ছে বেগমপুর-কাতিয়া ভায়া সড়ক। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভাটি বাংলার মানুষের নিত্যদিন দুর্ভোগের অন্ত নেই। এ সড়কের ৪ কিলোমিটার অংশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বাসগাড়ি আর চলে না। অন্যান্য গাড়ি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। তাও আবার দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে। জানা যায়, দীর্ঘ দুই বছর ধরে বেগমপুর-কাতিয়া ভায়া সড়ক দিয়ে চাতলপার, রহমতপুর, উত্তর কালনীরচর, বাংলাবাজার, বেগমপুর, নুরপুর, দক্ষিণ কালনীরচর ও বাংলাবাজার এলাকায় মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে। মুকামের খালের মুখ হতে বাংলাবাজার পর্যন্ত বেশি ভাঙন ধরেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার করুণ দশা অনেক দিন ধরে বিরাজ করলেও এলাকবাসী বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে ধর্ণা দিলেও তার কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয়রা সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সংস্কারের আশ্বাস দেন। এলাকার মানুষের একমাত্র সড়ক পথে যোগাযোগের রাস্তা নির্মাণের পর আর কোনো ধরনের মেরামত করা হয়নি বলে অনেকে জানান। বর্তমানে পাকা সড়কের কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাটি প্রবাসী অধ্যুষিত। এ অবস্থায় এলাকার প্রবাসীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িতে আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। এলাকার গ্রাম্যবাজারে যাচ্ছে না নিত্যপণ্য জিনিসপত্রের গাড়ি। যার ফলে আগের মতো অহরহ পাওয়া যাচ্ছে না নিত্যপণ্য জিনিসপত্র। বর্তমানে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছোট গাড়ি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও অটোরিকশা চলছে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে। শিক্ষার্থীরা কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। রোগী নিয়ে উপজেলা সদর ও মহাসড়কে আসতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। এতে বেশি সমস্যার শিকার হচ্ছেন নারী ও বৃদ্ধ ব্যক্তিরা। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলাগদি (মোল্লাবাড়ি) গ্রামের মো. আবু তাহের জানান, কিছু দিন হলো পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশে আসলাম। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে আমার সন্তানরা দেশে অবস্থান করেনি। এমনিতে প্রবাসীর সন্তানরা দেশে আসতে চায় না। আমরা চাচ্ছিলাম দেশমুখী করার। কিন্তু বেগমপুর-কাতিয়া ভায়া সড়কের অবস্থা দেখে আমারও মন নষ্ট হয়ে গেছে দেশের প্রতি। গোয়ালাবাজার মিবিনবাস ম্যানেজার চান মিয়া বলেন, সড়ক ভাঙা হওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলার ফাইলগাও ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুন্দর উদ্দিন সড়কের বেহাল দশার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে আমরা আমাদের এলাকার এমপি ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, এক মাসের মধ্যে সংস্কার করা হবে। আমাদের এ বেহাল অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি কামনা করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন