এবারের বই মেলা ঘিরে কোন ধরণের জঙ্গি হামলার হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, জঙ্গিদের হামলা চালানোর মতো সক্ষমতা নেই। তবুও বিচ্ছিন্নভাবে যে কোনও অপতৎপরতা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারো নিশ্চিদ্র ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত থাকবে। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকায় নজরদারির আওতায় থাকবে। কন্ট্রোলরুমে পর্যাপ্ত ফোর্স থাকবে। কেউ চাইলে তাৎক্ষণিক তাদেরকে সহায়তা দেওয়া হবে। বøগার বা লেখকরা নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে সহায়তা চাইলে তাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হবে। মেলায় আগত দর্শনার্থী, লেখক ও প্রকাশকদের নিরাপত্তায় পুলিশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত প্রতিটা ইঞ্চি সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। মেলায় স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা মনিটরিং করা হবে। একাডেমির ভেতরের স্টলে প্রবেশ করার জন্য দুটি প্রবেশপথ ও একটি বের হওয়ার পথ থাকবে। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনটি প্রবেশপথ ও তিনটি বের হওয়ার পথ থাকবে। প্রতিটি প্রবেশপথেই আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনী ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা তৎপর থাকবে। এবারও ইভটিজিংসহ যে কোনও ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা প্রবেশ পথ রাখা হয়েছে।
গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে কমিশনার বলেন, টিএসসি দিয়ে প্রবেশকারীরা মলচত্বরে এবং দোয়েল চত্বর দিয়ে প্রবেশকারীরা রাস্তার দুই পাশে এবং ঢাবির খেলার মাঠে গাড়ি পার্ক করবেন। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধসহ পুরো এলাকায় কোনও ভাসমান দোকান ও হকার থাকবে না। ছিনতাই-পকেটমার রোধে পুলিশের ফুট পেট্রোল ও মোবাইল পেট্রোল টিম কাজ করবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও ধর্মীয় ও সা¤প্রদায়িক উস্কানিমূলক কোনও বই মেলায় বিক্রি করা যাবে না। এসব বিষয় নজরদারিতে রাখতে বাংলা একাডেমির সার্ভিলেন্স টিম ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সজাগ থাকবে। কোনও স্টলে এমন বই পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, গতকাল পৃথকভাবে বইমেলার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে র্যাব। র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান বলেন, বইমেলার আয়োজন নির্বিঘœ করতে পুরো এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি র্যাবের টহল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। সাদা পোশোকেও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, মেলায় র্যাবের একটি কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মেলার সীমানা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে।
কোন ধরণের আগাম সতর্কবার্তা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আগাম কোন সতর্ক বার্তা নেই। তবুও কোনো গোষ্ঠী সন্ত্রাসী কার্যক্রম ঘটিয়ে যেন জননিরাপত্তা বিঘিœত করতে না পারে সে জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন