কুমিল্লা উত্তর সংবাদদাতা
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সরকারদলীয় চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী উপজেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মাইনউদ্দিন মুন্সি তপনকে নিয়ে স্থানীয় আ.লীগের অভ্যন্তরে চলছে তোলপাড়। তৃণমূলের নেতাকর্মী ও আ.লীগ ঘরানার সমর্থক ভোটারদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলের ত্যাগী ও পোড়খাওয়া জনপ্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বিএনপিদলীয় জনবিচ্ছিন্ন ও বিতর্কিত এই নেতাকে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়ায় উপজেলা আ.লীগ, ইউনিয়ন আ.লীগ ও অঙ্গ দলগুলোর নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) মেঘনা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আল বাকীর (শামীম) পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা যে কোনো মূল্যে এ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছে। এদিকে এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি-শৃঙ্খলার লক্ষ্যে গত বুধবার বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজা তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আল বাকীকে সমর্থন দিয়েছে। ফলে স্থানীয় বিএনপির একটি বড় অংশ ওই বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় মাঠে নেমেছে। নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, মেঘনা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিশাল অংকের অর্থ-বাণিজ্যের মাধ্যমে দলের বিরুদ্ধে এবং দলীয় গঠনতন্ত্র বিরোধী এহেন জঘন্য অপরাধ করেছে। দলীয় ফোরামে তাদের বিচার করার দাবী জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত এই বিতর্কিত প্রার্থীর নিশ্চিত ভরাডুবি হবে- এমন আশঙ্কা করেছে সরকারী দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় রাজনৈতিক বোদ্ধারা। এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আ.লীগকে লিখিতভাবে অবহিত করেও কোনো ফল হয়নি, অর্থের কাছে সব হেরে যায়। এদিকে দলীয় নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র আব্দুল আল বাকীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে। তারা এই জনপ্রিয় প্রার্থীর পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়ায় দলীয় প্রার্থী মাইন উদ্দিন মুন্সি তপন এক প্রকার কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। দিন যতই যাচ্ছে ভোটারদের হিসাব-নিকাশ বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে যাচ্ছে। প্রচার-প্রচারণায় ও ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক বিদ্রোহী প্রার্থী এলাকার জনপ্রিয় আব্দুল আল বাকী। মেঘনা উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং গোবিন্দপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আলহাজ শফিকুল ইসলাম মাস্টার বলেছেন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারী মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে যুবদল নেতাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে নৌকাকে ডুবু-ডুবু অবস্থায় নিয়ে গেছে। এটা তাদের দলের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র। দলীয় ফোরামে মনোনয়ন নিয়ে অর্থ-বাণিজ্যকারী এই দুই নেতার বিচার হওয়া উচিত। উপজেলা আ.লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, জনবিচ্ছিন্ন যুবদল নেতাকে অর্থের বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে আ.লীগকে ধ্বংস করার এক নীলনকশা বলে অবিহিত করেন। গোবিন্দপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সহ-সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন বলেন, আমরা নৌকার মাঝি-মাল্লা হয়ে বৈঠা বিএনপির হাতে তুলে দিতে পারি না। ইউনিয়ন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিএনপি নেতাকে আ.লীগের মনোনয়ন দিয়ে নৌকার নিশ্চিত ভরাডুবি করেছে। এটা দলের জন্য বিরাট বদনাম। তাই যারা টাকার বিনিময়ে এই জঘন্য অপরাধটি করেছে তাদের একদিন দলের নেতাকর্মীদের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন