মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিউটি বেগম (৩০) টেইলার্সের দোকানে ভাগ্য বদলে আজ স্বাবলম্বী। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সরদারপাড়ার মৃত বেলায়েত হোসেনের মেয়ে বিউটি বেগমের সাথে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার নলডুবি গ্রামের খলিলুর রহমান বিয়ে হয়। স্বামীর পৈত্রিক সামান্য জায়গার উপর বসত বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। গ্রামেই তার স্বামী দর্জির দোকান করে সংসারের ঘানি টানতে থাকে। এতে তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসার অদম্য ইচ্ছায় সাহস নিয়ে এগিয়ে আসে বিউটি বেগম। নিজে স্বামীর কাছে টেইলার্সের বিভিন্ন কাপড় তৈরির প্রশিক্ষণ নেয়। এক পর্যায় স্বামীকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সরদারপাড়া চলে আসে। উপজেলা সদরের জোবেদা শপিং সেন্টারের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বিউটি টেইলার্স নাম দিয়ে শুরু করে টেইলার্সের ব্যবসা। মেয়েদের থ্রি-পিচ, বোরখা, ব্লাউজ, পায়জামাসহ সকল ধরনের পোশাক তৈরি করতে থাকে। স্বল্প সময়ে তার পরিচিতির বিকাশ ঘটে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিউটি বেগম তার টেইলার্সে কাপড় তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন কাপড় বিক্রিও করেন। এতে গড়ে প্রতি মাসে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া, দোকান ভাড়া ও খাওয়া বাদ দিয়ে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করে। একান্ত এক সাক্ষাতকারে বিউটি বেগম ‘দৈনিক ইনকিলাব’-কে জানান, তার একমাত্র ছেলে স্থানীয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ও একমাত্র মেয়ে স্থানীয় পৌর বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। এক সময় তার সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় বহু কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করতে হয়েছে। সংসারের অভাব-অনটন দূর করতেই শ্বশুর বাড়ির ভিটা মাটি ত্যাগ করে স্বামীকে নিয়ে উপজেলা সদরের সরদারপাড়ায় বাবার বাড়ি চলে আসেন। সদরের জোবেদা শপিং সেন্টারে বিউটি টেইলার্স নাম দিয়ে টেইলার্সের দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। মেয়েদের সকল পোশাক তৈরি ছাড়াও সে ব্লক বাটির কাজেও পারদর্শী। এ ছাড়াও মেয়েদের বিভিন্ন পোশাকে এম্ব্র্র^য়ডারীর দক্ষতাও তার রয়েছে। টেইলারিং এর কাজ করেই ভাগ্য বদলে আজ সে স্বাবলম্বী নারী। সে আরো জানায়, প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তার ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে এলাকায় তার কাজের পরিধি আরো বৃদ্ধি করতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন